আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তার পর থেকে লাগাতার কর্মবিরতি চলছে কলকাতার নানা সরকারি হাসপাতালে। জেলার কিছু হাসপাতালে প্রভাব পড়লেও সেটা খুব বড় আকার ধারণ করেনি। ইতিমধ্যেই বাঁকুড়ার হাসপাতাল রবিবার থেকে কর্মবিরতি তুলে নিয়েছে। কিন্তু কলকাতায় কর্মবিরতি থামার নামই নেই। বরং স্লোগান তীব্র হচ্ছে—‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। এই আবহে কাকদ্বীপ হাসপাতালে ৮০০’র বেশি মায়ের প্রসব হয়েছে। গত ১৬ অগস্ট থেকে এখনও পর্যন্ত এই তথ্যই মিলেছে হাসপাতাল সূত্রে।
তাহলে কি তাঁরা জাস্টিস চান না? এখানকার চিকিৎসকদের দাবি, নির্দিষ্ট সময় জাস্টিস দাবি করে আন্দোলন হয়েছে। তবে তার সঙ্গে চলেছে চিকিৎসাও। তা না হলে গ্রামীণ মানুষজন এমন কঠিন পরিস্থিতিতে কোথায় যাবেন! গত ১৬ অগস্ট ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক গৃহবধূর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে তখন কর্মবিরতি চলছিল। ফলে চিকিৎসা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার মেঘ দেখা দিয়েছিল। তাই কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় ওই অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে। সেখানেই সন্তান প্রসব করেন তিনি। আবার পাথরপ্রতিমার এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর এসএসকেএম হাসপাতালে এসে প্রসব করার কথা ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি বেগতিক হয়ে পড়ায় কাকদ্বীপ হাসপাতালেই তিনি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন।
আরও পড়ুন: ‘আর একজন ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে অবিচার হতে দেব না’, এবার গর্জে উঠলেন আখতার আলি
এইরকম একাধিক ঘটনা ঘটেছে। কলকাতার হাসপাতালে কর্মবিরতি চলার জেরে এই কাকদ্বীপ হাসপাতালের উপরই অনেকে ভরসা রেখেছেন। আর তখনই ভরসা রাখার সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে খবর। হবু মায়েরা কোথায় যাবেন? এই প্রশ্ন যখন অনেকের মনে উঠেছিল তখন কাকদ্বীপ হাসপাতালই নীরবে একের পর এক হবু মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে। ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও কর্মবিরতি চলছে। তাই সেখান থেকেও অনেকে ফিরে এসে কাকদ্বীপ হাসপাতালে প্রসব করিয়েছেন। এই বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্যও মিলেছে।
ডায়মন্ডহারবার স্বাস্থ্য জেলার তথ্য বলছে, অগস্ট মাসে কাকদ্বীপ হাসপাতালে ৮০০’র বেশি প্রসূতির ডেলিভারি হয়েছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে এটা একটা রেকর্ডও বটে। এই বিষয়ে স্বাস্থ্যবিভাগের এক অফিসার বলেন, ‘এটা একটা বড় সাফল্য। অস্বীকার করার জায়গা নেই। নানা গ্রামে কতজন প্রসূতি থাকেন এবং প্রসবের দিন কবে তার তথ্য থাকে আশাকর্মীদের কাছে। তাঁরাই নিয়মিত খোঁজখবর নেন এবং এমন কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁরাই এই হবু মায়েদের কাকদ্বীপ হাসপাতালে পাঠান। সেই হবু মায়েদের এখানে চিকিৎসা করা হয়েছে। প্রত্যেকটি প্রসব সাফল্যের সঙ্গে হয়েছে।’