রাজ্য–রাজনীতিতে এখন সবচেয়ে বেশি চর্চিত বিষয় আরজি হাসপাতাল কাণ্ড। এখন এই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। মাঝে কেটে গিয়েছে ১৭ দিন। এই কদিনে তদন্তে নানা বাঁক এসেছে। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার প্রতিবাদে প্রেসক্রিপশনে ওষুধ ও পরামর্শ লেখার সঙ্গে সঙ্গে ‘বিচার চাই’ স্ট্যাম্প মারছেন উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত পুরসভার তৃণমূল কংগ্রেসের এক চিকিৎসক কাউন্সিলর। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ–খুনের ঘটনার প্রতিবাদের এই পথ ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য জেলাতেও। প্রতিবাদের এই পথকেই বেছে নিয়েছেন বীরভূমের রামপুরহাটের এক চিকিৎসকও।
তবে রায়গঞ্জের চিকিৎসক দেবব্রত রায়ের প্রেসক্রিপশনের ছবি সামনে আসায় জোর চর্চা শুরু হয়েছিল। কারণ সেখানে লাল রঙের স্ট্যাম্পে গোল করে লেখা ছিল, ‘আরজি কর: বিচার চাই।’ আর আজ, শনিবার দেখা গেল, বারাসতের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং দন্তচিকিৎসক সুমিত একই স্ট্যাম্প ব্যবহার করলেন প্রেসক্রিপশনে। তিনি বলেন, ‘আরজি কর হাসপাতালের নারকীয় ঘটনায় সমাজের প্রত্যেকটি স্তরের মানুষ প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। যার জেরে প্রতিবাদের ভাষা নানা আঙ্গিকে নানারকম হয়ে যাচ্ছে। পরিষেবা বন্ধ না রেখে এভাবেও প্রতিবাদ করা যায়।’
আরও পড়ুন: কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে জামিনে মুক্ত ছাত্রসমাজের নেতা সায়ন, সুপ্রিম কোর্টে নবান্ন
চিকিৎসকদের কাজে ফিরতে অনুরোধ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি, রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব এবং স্বয়ং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই আবহে তৃণমূল কংগ্রেসের চিকিৎসক–কাউন্সিলরের ‘প্রতিবাদের ভাষা’ নিয়ে দলীয় মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘বিচার তো আমরাও চাইছি। ডাক্তারবাবুরা প্রতিবাদ করতেই পারেন। তাঁদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসে স্ট্যাম্পও দিতে পারেন। তাতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে তাঁরা যেন কর্মবিরতি তুলে কাজ শুরু করেন। আন্দোলনে থাকুন। তবে পরিষেবা দিন মানুষকে। একটা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে রোগীদের যেন মৃত্যু না নয়।’
এছাড়া আরজি কর হাসপাতালের নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদ জানান রামপুরহাটের চিকিৎসক দেবব্রত দাস। এখনও রাজ্যের নানা প্রান্তে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্দোলন প্রতিবাদ চলছে। চিকিৎসক দেবব্রত দাসের কথায়, ‘প্রতিবাদের হাতিয়ার আমার কাছে এই প্রেসক্রিপশন। যে ঘটনা সরকারি হাসপাতালে ঘটেছে, সেটার নিন্দা করার ভাষা নেই। তার মধ্যে সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানাচ্ছে যে, পুলিশ নাকি তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করেছে। এটা খুব বড় অভিযোগ। এতে আমরা ভয় পাচ্ছি। চিকিৎসকদের যে সব হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ আছে সেখানে এবং অন্যান্য জায়গায় এই প্রেসক্রিপশনের ছবি পাঠিয়ে দিয়েছি।’