আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য–রাজনীতি। এই ঘটনায় টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল গ্রেফতার হয়েছেন সিবিআইয়ের হাতে। আর প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষও গ্রেফতার হয়েছেন। মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। তদন্ত করছে সিবিআই। এই আবহে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের বেশ কিছু দাবি ছিল। যার বেশিরভাগই মেনে নিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষায়, ৯৯ শতাংশ দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আজও কাজে ফিরলেন না তাঁরা। এই নিয়ে এবার হুঁশিয়ারি দিলেন হুগলি জেলার বিধায়ক অসিত মজুমদার।
এদিকে সাংসদ সৌগত রায়ও জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। দমদম কেন্দ্রের সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের পরও ওরা কাজে যোগ দেয়নি। উল্টে ডিস্কো বাজিয়ে নাচছিল। তিন চারজন অফিসারের ট্রান্সফার হয়েছে তো কী হয়েছে। তারা তো অন্য কোথাও চাকরি করবে। এই যে দেখানো হচ্ছে অভূর্তপূর্ব জনজাগরণ এসব ভিত্তিহীন। এটা জুনিয়র ডাক্তাদের জয় বলে মনে করি না।’ সৌগত রায় যখন এমন কথা বলছেন তখন জুনিয়র ডাক্তাররা আজ, বুধবার নবান্নে গিয়ে বৈঠক করছেন মুখ্যসচিবের সঙ্গে। কিন্তু বারবার নানা দাবি তুলে কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়া পছন্দ নয় বিধায়ক অসিত মজুমদারের।
আরও পড়ুন: বানভাসী পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে জলে পড়ে গেলেন সাংসদ–বিধায়করা, বীরভূমে দুর্ঘটনা
অন্যদিকে ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশ কমিশনার, ডিসি নর্থ, স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা পদে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি অনুযায়ী বদল এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরও ওঠেনি কর্মবিরতি। তাই হুগলির বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘মমতাদি অনেক বেশি স্নেহ দেখাচ্ছেন। তারপরও জুনিয়র ডাক্তাররা যা করছেন সেটা কিন্তু বাড়াবাড়ি। ওরা সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।’ সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও আজ এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি ন্যায্য। ১৪ দিনের মধ্যে নিরাপত্তার সব কাজ শেষ করতে হবে। আর মানুষের জীবনের স্বার্থে কাজে ফিরুন।
এছাড়া এই পরিস্থিতিতে বহু রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বারবার জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার কথা বলেছেন। সেখানে আজ হুগলির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মজুমদারের বক্তব্য, ‘জুনিয়র ডাক্তার হিসেবে ওরা ওদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। এই জিনিস কিন্তু মানুষ আর বেশিদিন বরদাস্ত করবে না।’ একটানা প্রায় ৪০ দিন ধরে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার প্রতিবাদে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।