আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাজ্যজুড়ে পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখন এই নারকীয় ঘটনার বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস শহর থেকে জেলায় সর্বত্র অপরাধীর শাস্তির দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করে হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই আবহে আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল উত্তরপ্রদেশের দৃষ্টান্ত তুলে ধর্ষণ–খুনে অভিযুক্তকে ‘এনকাউন্টার’ করার দাবি তুললেন। এটাই উপযুক্ত শাস্তি বলে মনে করেন তিনি। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এই ধর্ষণ–খুনের ঘটনার পর গর্জে উঠেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি ‘এনকাউন্টার’ করার নিদান দিয়েছিলেন তিনি। তারপর যখন আরজি কর হাসপাতাল ভাঙচুর হয় তখন এক্স হ্যান্ডেলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। আর কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে ফোন করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। এটা দেখে বাংলার জনগণ সাধুবাদ জানিয়েছেন। এবার এই ঘটনায় দোষীর কঠোর সাজার দাবিতে রবিবার আলিপুরদুয়ার শহরে টাউন ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে সভা করা হয়। আর সেখানে বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশের মতো পশ্চিমবঙ্গেও চালু হোক এনকাউন্টার।’
আরও পড়ুন: আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় নির্যাতিতার নামপ্রকাশ, মুখ্যমন্ত্রীকে খুনের হুমকি, গ্রেফতার যুবক
এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে রাস্তায় নেমেছিলেন। দোষীর ফাঁসি চাই স্লোগান তুলেছিলেন। এবার আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় বিধায়ক সরাসরি এনকাউন্টারের নিদান দেওয়ায় দেশের আইন নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এই বিষয়ে সুমন কাঞ্জিলালের বক্তব্য, ‘এই নিয়ে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করা হোক। আইন আরও শক্তিশালী করা হোক।’ বিজেপি এখন এই ইস্যুতে নিজেদের পালে হাওয়া টানতে পথে নামছে। ধরনা, ঘেরাও–সহ নানা কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছেন সুকান্ত মজুমদার। এই বিষয়ে ফালাকাটার বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মণের দাবি, ‘আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা দ্বিধাবিভক্ত। মুখ্যমন্ত্রীর গদি নড়বড় করছে। তাই অভিষেকের সুরে সুর মিলিয়ে নিজেকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক।’
যদিও পাঁচদিন হয়ে গেলেও সিবিআই তদন্ত এখন প্রশ্নের মুখে। কারণ কোনও গ্রেফতার হয়নি। বড় কোনও তথ্যপ্রমাণও সামনে নিয়ে আসতে পারেনি তদন্তকারীরা। এতে এখন পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। তাই সুমন কাঞ্জিলালের কথায়, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবির প্রেক্ষিতেই এদিন আমি এনকাউন্টারের কথা বলেছি। আমি নতুন করে এই দাবি করিনি। আইন সংশোধন করে একই শাস্তির দাবি জানিয়েছি আমি। এতে বিরোধিতার কী আছে? অপরাধীকে তো কঠিন শাস্তি দিতেই হবে। না হলে এই সামাজিক ব্যাধি নির্মূল হবে কেমন করে!’