আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় জামিন পেলেন ওই হাসপাতালেরই প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। এমনকী আজ, শুক্রবার চার্জশিট দিতে না পারায় জামিন মিলল দু’জনের। শিয়ালদা আদালতে শুধুমাত্র ধর্ষণ–খুনের প্রমাণ লোপাটের অভিযোগের মামলা ছিল। সেখানেই জামিন পেলেন তাঁরা। তবে অপর মামলায় অর্থাৎ আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতির মামলায় জামিন পাননি সন্দীপ ঘোষ। গ্রেফতারের ৯০ দিন পরও চার্জশিট দিতে পারল না সিবিআই। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন নির্যাতিতার বাবা।
এই ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তাররাও হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাই আর উঠল না ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান। তবে এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন নির্যাতিতার বাবা। রীতিমতো হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায় তাঁকে। সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট তারা আজই জমা দিতে পারছেন না। তাই তাঁদের জামিন মেলে বলে সূত্রের খবর। ২০০০ টাকা বন্ডের বিনিময়ে জামিন পেয়েছেন সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডল। তবে এই জামিন নিয়ে নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। সিবিআই আগেই লিখে দিয়েছিল সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে ৯০ দিনের মধ্যেই যা করার করব। তদন্ত যে ঠিক মতো হয়নি তার প্রমাণ তো পাওয়াই গেল। সিবিআইয়ের উপর এবার হতাশ হচ্ছি। আমরা আদালতে যাব। আদালত ছাড়া তো আমাদের আর কোনও রাস্তা খোলা নেই।’
আরও পড়ুন: রাজ্যের পুরমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন গোঘাটের বিজেপির বিধায়ক, দলবদলের গুঞ্জন শুরু
সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নির্যাতিতার মা। তিনি এই ঘটনায় যথেষ্ট অসন্তুষ্ট মা। শুক্রবার এই খবর কানে আসার পরেই সংবাদমাধ্যমের সামনে বললেন, ‘এই ঘটনা আমি খুবই হতাশ। বলার মতো কোন কথা নেই আমাদের কাছে। সিবিআই ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট না দেওয়ায় তাদের জামিন হয়ে গেল। আর কি বলার আছে? ওরা যে তদন্ত ঠিক পথে করছে না তার প্রমাণ পাওয়া গেল। উচ্চ আদালতে যেতে হবে এবার। এটা অত্যন্ত দুঃখের। আমরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। তদন্তকারী সংস্থা তাঁদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।’
অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে আর কোনও মামলা নেই। তাই তিনি এবার জেল থেকে বের হতে পারবেন। তবে তাঁকে যখন থানা থেকে ডাকা হবে তখনই তাঁকে যেতে হবে। এই নিয়ে নির্যাতিতার বাবার বক্তব্য, ‘চার্জশিট জমা দেওয়ার জন্য রাজ্য প্রশাসনের যে এনওসি ইস্যু করার প্রয়োজন ছিল সেক্ষেত্রে অনর্থক টালাবাহানা করে তদন্ত প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার চেষ্টা হয়েছে। বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাওয়া ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনও পথ খোলা নেই।’ নির্যাতিতা নিহত তরুণী ডাক্তারের মায়ের কথায়, ‘আমি তো আর সিবিআই নই, তাহলে আমি কাজটা করে দিতাম।’