তীব্র ও ব্যাপক গণ-আন্দোলন সত্ত্বেও রাজ্যে যে নারীর সুরক্ষা তলানিতেই থেকে গিয়েছে, জয়নগরের ঘটনায় কার্যত সেটাই আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল। এই সময়-এ প্রকাশিত খবর অনুসারে, নারী নিরাপত্তার এমন বেহাল দশার জন্য রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকেই দায়ী করেছেন আরজি কর কাণ্ডে নিহত তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার বাবা-মা।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে জয়নগরে চতুর্থ শ্রেণির এক বালিকা নিখোঁজ হয়ে যায়। অভিযোগ, শুক্রবার রাতেই পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ তাতে কর্ণপাত পর্যন্ত করেনি!
পরবর্তীতে শনিবার ভোর রাতে মাত্র ন'বছরের ওই বালিকার দেহ উদ্ধার হয়। এরপর ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে স্থানীয় ফাঁড়িতে হামলা চালান এলাকার বাসিন্দারা।
যদিও ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় এক তরুণকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বয়স ১৯ বছর! পুলিশের দাবি, ধৃত তরুণ প্রাথমিক জেরায় পুলিশের কাছে ওই বালিকাকে খুন করার কথা স্বীকার করেছে। যদিও মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কিনা, কিংবা খুনের নেপথ্যে বিশেষ কোনও কারণ রয়েছে কিনা, সেটা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
এই প্রেক্ষাপটে জয়নগরের এই মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার বাবা-মা।
তাঁদের বক্তব্য, এত কিছু হয়ে যাওয়ার পরও কিছু 'মানুষ' মেয়েদের নিশানা করছে। তাদের উপর হামলা চালাচ্ছে। মেয়েদের সম্ভ্রম হরণ করা হচ্ছে, তাদের নৃশংসভাবে খুন করা হচ্ছে!
দুষ্কৃতীরা এত সাহস পাচ্ছে কীভাবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন আরজি করে নির্যাতিতার বাবা-মা। এই সময়-এ প্রকাশিত খবর অনুসারে, এর জন্য তাঁরা রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকেই দায়ী করেছেন।
বস্তুত, জয়নগরের ঘটনাতেও পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা এবং নিহত ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা সরাসরি অভিযোগ করেছেন, যদি বালিকার নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পদক্ষেপ করত, মেয়েটিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করত, তাহলে হয়তো এই নির্মম, নৃশংস অকালমৃত্যু ঠেকানো যেত।
কিন্তু, পুলিশ সেই চেষ্টাই করেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। আর মূলত সেই কারণেই ওই বালিকার দেহ উদ্ধারের পর তাঁদের সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ে পুলিশ ও স্থানীয় ফাঁড়ির উপর। যার জেরে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী উন্মত্ত জনতার হাতে প্রহৃত হন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিলেও নতুন করে অবস্থান বিক্ষোভ ও অনশন শুরু করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।