আজ, শুক্রবার আবার অবরোধ হয়ে গেল বিটি রোড। আর তার জেরে ভোগান্তিতে পড়তে হল বিস্তর মানুষজনকে। বরাহনগরের শিক্ষিকার মৃত্যু হয় কয়েকদিন আগে। আর ওই মৃত্যুতে জড়িত দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি তোলা হল। সেই দাবি আজ তুলে পথ অবরোধ করা হল বিটি রোডের ডানলপ মোড়। পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দারা মিলেই এই পথ অবরোধ করেন। আজ অবরোধকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সঠিক তদন্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা হলে অবরোধ তোলা হবে না। এই নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়।
স্কুল শিক্ষিকার আত্মহত্যার পিছনে রয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতযশ। এমনই অভিযোগ মৃত্যুর আগে করে গিয়েছেন ওই শিক্ষিকার। বরাহনগর পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন শিক্ষিকা জসবির কউর (৫৮)। তিনি দীর্ঘ ২২ বছর ডানলপ খালসা মডেল সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলে শিক্ষিকা ছিলেন। অবসরের মাত্র দু’বছর আগে বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির পক্ষ থেকে তাঁকে নানাভাবে হেনস্থা করা শুরু হয় বলে অভিযোগ। নানা সমস্যা তৈরি করা হয় বলেও ভিডিয়ো–তে অভিযোগ তুলে রেখে গিয়েছেন ওই শিক্ষিকা। এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গত ৫ ডিসেম্বর আত্মঘাতী হন তিনি। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, জসবীরকে হেনস্থার পাশাপাশি অপমানজনক মন্তব্যও করা হতো।
স্বামী মারা যাওয়ার পর শিক্ষিকার চাকরি পান জসবির কউর। সেখানেই নানা হেনস্থা সহ্য করতে হয় তাঁকে। ফেসবুকে প্রায় ১৫ মিনিটের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে আত্মঘাতী হন জসবির। সেখানে তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মানসিক হেনস্থার অভিযোগ করেছেন। তাই আত্মহত্যা করছেন বলেও জানিয়ে যান তিনি। এই কারণে দোষীদের শাস্তির দাবি তুলে পথ অবরোধ করা হয়। স্কুলের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে ওই ভিডিয়ো–তে। এই ঘটনার পর স্কুলের প্রিন্সিপাল গুরমিত কর আরজানি এবং কয়েকজনের বিরুদ্ধে দক্ষিণেশ্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার ভাই যশবিন্দর সিং।
এবার আরও অভিযোগ উঠেছে। সেটি হল, এই ঘটনা নিয়ে যাঁরা প্রতিবাদ করছেন, তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এসব মেনে নেওয়া হবে না। গ্রেফতার করতে হবে বলে অবরোধ করা হয়। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এই ঘটনায় যদিও এখনও পর্যন্ত কাউকেই আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি। তবে এই ব্যস্ততম ডানলপ মোড় অবরোধ হওয়ায় কলকাতার দিকে যাওয়া গাড়িগুলি সিঁথি মোড়ে যানজটে আটকে পড়ে। দক্ষিণেশ্বর অভিমুখেও গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়।