গঙ্গাসাগর মেলায় প্রচুর পরিমাণে বর্জ্য প্লাস্টিক জমা হয়েছে। সেই প্লাস্টিক এবার ব্যবহার করা হচ্ছে রাস্তা নির্মাণের কাজে। যদিও রাস্তা নির্মাণের জন্য প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন কিছু নয়। তবে এবার গঙ্গাসাগরে জমা হওয়া বর্জ্য প্লাস্টিক দিয়ে প্রথমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং ২ নম্বর ব্লকে রাস্তা নির্মাণ হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই ব্লকের পলতা তালতলা এলাকায় এভাবে প্লাস্টিক দিয়ে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে ৪.৮৫ কিলোমিটার লম্বা রাস্তা তৈরি করা হবে। এই কাজের সূচনা করেছেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। শনিবার থেকে শুরু হয়েছে রাস্তা নির্মাণের কাজ।
আরও পড়ুন: রাস্তায় গর্ত থাকলে হোয়াটসঅ্যাপ করুন, সারিয়ে যাবে পূর্ত দফতর, ধার্য বড় অঙ্ক
এই রাস্তা তৈরির জন্য খরচ পড়বে ৮০ লক্ষ টাকা। বিটুমিন এবং প্লাস্টিক মিশিয়ে এই রাস্তা তৈরি করা হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে পাকা রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে, তার উপরের স্তরে পিচের সঙ্গে প্লাস্টিক মিশিয়ে দেওয়া হবে। এর ফলে রাস্তা যেমন শক্তপোক্ত হবে এবং টেকসই হবে, তেমনই খরচ কমবে। আবার পরিবেশ দূষণও রোধ করা সম্ভব হবে। সাধারণ জল পেলে পিচের রাস্তা তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে বর্ষার সময় অনেক রাস্তার বেহাল দশা দেখা যায়। তবে পিচের সঙ্গে প্লাস্টিক মেশানো থাকলে সেই রাস্তা দ্রুত নষ্ট হয় না। অনেকদিন টিকে থাকে।
প্রসঙ্গত, গঙ্গাসাগর মেলায় এবারও প্রচুর পরিমাণে বর্জ্য প্লাস্টিক জড়ো হয়েছে। যদিও প্রশাসনের তরফে গঙ্গাসাগর মেলায় প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তারপরেও মেলা শেষে প্রচুর প্লাস্টিকের বোতল এবং অন্যান্য প্লাস্টিকের সামগ্রী পড়ে থাকতে দেখা যায় মেলা প্রাঙ্গণে। দূষণ রোধে সেই সব বর্জ্য সংগ্রহ করে প্রশাসন। পরে নানা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে সেই প্লাস্টিক রাস্তা তৈরির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
জেলা শাসক সুমিত গুপ্তা জানিয়েছেন, গঙ্গাসাগর থেকে বর্জ্য প্লাস্টিক সংগ্রহ করার পর সেগুলি ধুয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে। এরপর একাধিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সেগুলিকে রাস্তা তৈরিতে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হচ্ছে। এরজন্য প্রায় ২ টন মশলা আনা হয়েছে। স্টেট রুরাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ইঞ্জিনিয়াররা এবিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সেক্ষেত্রে কতটা বিটুমিনে কতটা প্লাস্টিকের বর্জ্য মেশাতে হবে বা কোন পদ্ধতিতে মেশাতে হবে, তা তাঁরা দেখছেন। নিজের বিধানসভা এলাকায় এভাবে রাস্তা তৈরি হওয়ায় খুশি ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লার। তিনি জানান, গোটা জেলাতেই এভাবে উন্নয়নের কাজ হবে।