সমীক্ষায় উঠে এসেছিল ভারতে কমে এসেছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। আর বাংলায় শিকার হয়ে যাচ্ছে তারা বলেও অভিযোগ উঠেছিল। এই নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছিল প্রকৃতিপ্রমীদের। সুন্দরবনে বাঘ কমে যাচ্ছে এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু হঠাৎই পরিস্থিতি পাল্টা গেল। বাংলাদেশ থেকে একধাঁক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সুন্দরবনে চলে এসেছে। তাতে সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। আর প্রকৃতিপ্রেমীদের মধ্যে খুশির হাওয়া দেখা দিয়েছে।
ঠিক কী বলছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী? এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে এখন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা কমবেশি ১২৩টি। ২০২১ সালের বাঘ শুমারি অনুযায়ী, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৯৬টি। এই বছর বাঘের শুমারির তথ্য এবং ছবি হায়দরাবাদে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এখনও আসেনি। তবে সংখ্যা বাড়ার ইঙ্গিত মিলেছে। নতুন ২৭টি বাঘের সন্ধান মিলেছে। সুন্দরবন এলাকায় রামগঙ্গা–সহ অন্যান্য এলাকায় অন্তত পাঁচটি দ্বীপে বাঘের সন্ধান মিলেছে। এই দ্বীপগুলিতে টাইগার রিজার্ভ এরিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এখানকার সংখ্যাটাও যোগ হবে। ভবিষ্যতে বাঘেরাও বাচ্চার জন্ম দেবে। সংখ্যায় বাড়বে।’
পদ্মাপার থেকে বাংলার বাঘ ঢুকছে কেন? বন দফতর সূত্রে খবর, সুন্দরবনের একটা বড় অংশ বাংলাদেশের মধ্যে পড়ে। বাংলাদেশের বাদাবনে বাঘের খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে। তাই খাবারের সন্ধানে সীমান্ত পেরিয়ে বাঘেরা ভারতে ঢুকে পড়ছে। ২০০৪ সালে বাংলাদেশে ৪০০ বাঘ ছিল। ২০১৭ সালে সেটা কমে দাঁড়িয়েছিল ১৫০–তে। বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘জঙ্গলে খাবারে টান ধরলেই বাঘ গ্রামে ঢুকে পড়ে। তাই বাঘ নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান বানানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে বাঘের খাবারের অভাব না দেখা দেয় তা নিয়েও স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই নৌকায় চাপিয়ে হরিণ এবং শূকর নিয়মিত ছেড়ে দিয়ে আসা হয় গভীর জঙ্গলে। বাংলাদেশের জঙ্গলে খাবার নেই। তাই বাঘ এদেশে চলে আসছে।’
কী তথ্য উঠে এসেছে? বিধানসভায় গন্ডার সংরক্ষণ সংক্রান্ত পুরনো আইন প্রত্যাহার করে একটি নতুন বিল জমা দিয়েছেন বনমন্ত্রী। এই বিল পাশ হয়ে গেলে গন্ডার শিডিউলে ক্যাটাগরি হিসাবে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনের অন্তর্ভুক্ত হবে। ফলে গন্ডার শিকারের শাস্তি বাড়বে। আর মন্ত্রী সেখানে জানান, শুধু বাঘ নয়। বুনো হাতি ও বাইসন নিয়েও চিন্তা রয়েছে। তাই ৬৫০ কোটি টাকায় ৭টি হাতির করিডর তৈরি করা হচ্ছে।