গরিবদের মেয়ের বিয়েতে আর্থিক সহায়তার জন্য রাজ্য সরকারের একটি প্রকল্প হল ‘রূপশ্রী’। এই প্রকল্পে এককালীন ভাতা দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার। এবার রূপশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদনকারীর কাছে ১০ হাজার টাকা কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ উঠল। ঘটনাটি মালদার চাঁচোলের জালালপুরের। তাও এমন একটি পরিবারের সঙ্গে কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে যেখানে পাত্রীর বাবা-ই হলেন একজন দৃষ্টিহীন। কোনওভাবে সংসার চলে তাদের। মেয়ের বিয়ের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে তাঁকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কিন্তু, কাটমানির টাকা দিতে না পারায় মেয়ের রূপশ্রীর আবেদন বাতিল করার অভিযোগ উঠল। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
আরও পড়ুন: দেরি করা চলবে না, বিয়ের দিন বা আগেই দিতে হবে রূপশ্রীর টাকা, নির্দেশ রাজ্যের
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, পাত্রীর বাবা আনোয়ার হোসেন একজন দৃষ্টিহীন এবং তিনি বৃদ্ধ। মেয়ের বিয়ের জন্য কোনওভাবেই টাকা জোগাড় করতে পারছিলেন না। তার মেয়ে আজিমা খাতুন জানান, তাদের বাড়িতে গিয়ে আধিকারিকরা জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ১০ হাজার টাকা চেয়েছিল। বলেছিলেন যে টাকা না দিতে পারলে আবেদন বাতিল হয়ে যাবে। শেষে সেই কাটমানির টাকা জোগাড় করতে না পারায় আবেদন বাতিল হয়ে যায়। ঘটনায় চাঁচোল ২ নম্বর ব্লকের বিডিও’র কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন আনোয়ার হোসেন। পরে ঘটনার কথা জানতে পেরে জেলা শাসক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা মোবারক হোসেন জানান, তিনি বিডিওর সঙ্গে দেখা করে যতটা সম্ভব সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করবেন। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূলের দিকে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, গোটা রাজ্য দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে। তৃণমূল নেতারা সকলেই দুর্নীতিগ্রস্ত কন্যাশ্রী, রূপশ্রী সহ যতগুলি ‘শ্রী’ প্রকল্প রয়েছে তাতে সরকার থেকে শুরু করে প্রশাসনের লোকজন যে দুর্নীতি করে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এই প্রকল্পের আওতায় বিয়ের জন্য দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের এককালীন ২৫ হাজার টাকা দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার। সেক্ষেত্রে যাদের পরিবারের বার্ষিক আয় দেড় লাখের কম তারা এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে থাকেন। তাছাড়া আবেদনকারীর বয়স হতে হবে নূন্যতম ১৮ বছর এবং পাত্রের বয়স হতে হবে ন্যূনতম ২১ বছর। সেক্ষেত্রে আবেদনকারী আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট দফতরের অধিকারিকরা খতিয়ে দেখার পর ছাড়পত্র দিলে তবেই মেয়েদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পৌঁছে যায়।