কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন তৃতীয় দিনে পড়ল। এই তৃতীয় দিনের কর্মবিরতিতে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন নবনির্বাচিত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। কিন্তু সেখানে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এমনকী তাঁর উদ্দেশে ‘গো–ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে বিড়ম্বনা তৈরি হওয়ায় হাসপাতাল চত্বরে সামান্য সময় থেকে শুভঙ্কর সেখান থেকে বেরিয়ে যান। তিনি জানান, রাজনৈতিক ঝান্ডা ছাড়াই সাগর দত্ত হাসপাতালে গিয়েছিলেন তাঁরা। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদকে সমর্থন করছেন তাঁরা। তাঁকে ‘গো–ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়নি।
এদিন শুভঙ্কর সরকারের সঙ্গে সাগর দত্ত হাসপাতালে আসেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তাপস মজুমদার, রাজ্য নেতৃত্ব কল্লোল মুখোপাধ্যায়–সহ জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বরা। তাঁরা যখন অবস্থান বিক্ষোভ মঞ্চে আসেন তখন জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষ থেকে গো–ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয়। রবিবার দুপুরে সাগর দত্ত হাসপাতালে গিয়েছিলেন শুভঙ্কর সরকার। জুনিয়র ডাক্তাররা সেখানে অবস্থানে বসেছেন। মাইক হাতে নিয়ে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘যাঁরা এই মঞ্চকে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন, তাঁদের হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, ফিরে যান। গো–ব্যাক।’
আরও পড়ুন: ‘একটা টাকাও কেউ দেয়নি, খোঁজও নেয়নি’, উত্তরবঙ্গ সফরের আগে কেন্দ্রকে তোপ মমতার
দু’দিন আগে চিকিৎসকদের নিগ্রহকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতাল। শুক্রবার রাতে এই হাসপাতালে একজন রোগীর মৃত্যু হয়। তার পর তাঁর আত্মীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। আর হাসপাতালের চারতলায় উঠে ডাক্তার, নার্সদের মারধর করেন বলে অভিযোগ। হাসপাতালে ভাঙচুর পর্যন্ত করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। কিন্তু এই ঘটনায় এক পুলিশকর্মী–সহ সাতজন আহত হন। এই ঘটনার পর শুক্রবার রাত থেকেই হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি পালন করছেন।
আজ এখানে কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল আসতেই জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমাদের এই মঞ্চ কোনও রাজনৈতিক মঞ্চ নয়। কোনও রাজনৈতিক রঙ এই মঞ্চে লাগাতে আমরা দেব না। আমাদের এই আন্দোলনে সাধারণ মানুষ সঙ্গে রয়েছে। তারা আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে রয়েছে। তাই আমরা কোনও রাজনৈতিক রঙ লাগাতে দেব না।’ আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন, ‘আমরা কেউ অরাজনৈতিক ব্যক্তি নই। প্রত্যেকের রাজনৈতিক পরিচয় আছে। কিন্তু সেই পরিচয় বাইরে রেখে মানুষের স্বার্থে মানুষ হিসাবে আমরা এখানে এসেছি। জেলা কংগ্রেসের পরিচয় নিয়ে আসিনি। দলের ঝান্ডা নিয়েও আসিনি। চিকিৎসা করার সময় ডাক্তাররা যেমন রোগীর ধর্ম, বর্ণ দেখেন না, তেমন তাঁদেরও রাজনৈতিক পরিচয় থাকে না। এখন আমাদেরও নেই।’