করোনা রোগীর জটিল অস্ত্রপচার করে প্রাণ বাঁচাল সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। রোগীকে পূর্ণ অচৈতন্য করে খাদ্যনালীর জটিল অস্ত্রপচার করে নজির গড়লেন চিকিৎসকেরা।
করোনা আক্রান্ত রোগী। তার উপর পূর্ণ অচৈতন্য করে জটিল অস্ত্রপচার যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ ছিল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিরল অস্ত্রপচার করে সাফল্য পেয়েছেন চিকিৎসকেরা। যেহেতু রোগী করোনায় আক্রান্ত রয়েছেন, সেকারণে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার প্রবল আশঙ্কাও ছিল। তবে শেষপর্যন্ত তেমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রোগীর শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল রয়েছে।
নিমতা বেলঘরিয়ার বাসিন্দা ৫৮-বছর বয়সী ভোলা দাস গুরুতর করোনায় আক্রান্ত হয়ে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে ভরতি হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাঁর প্রচন্ড পেটে ব্যাথা শুরু হয়। চিকিৎসকরা তার পরীক্ষা করে দেখেন, ওই রোগীর খাদ্যনালীতে ফুটো রয়েছে। চিকিৎসা পরিভাষায় এই রোগকে পেপটিক পারফোরেশন বলা হয়। এই ধরনের রোগীর দ্রুত অস্ত্রপচার না করলে, প্রাণ সংশয় পর্যন্ত হতে পারে।
করোনায় আক্রান্ত তার উপর এই ধরনের জটিল রোগ। কীভাবে রোগীকে অচৈতন্য করা হবে এই নিয়ে আতান্তরে পড়ে যান চিকিৎসকরা। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় অস্ত্রপচার যত জটিলই হোক না কেন, রোগীর প্রাণ বাঁচাতে তা করবেন তাঁরা। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে দ্রুত চিকিৎসকদের প্যানেল তৈরি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এক মুহুর্ত দেরি না করে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের আরএমও ডা. শুভদীপ হালদারের নেতৃত্বে পাঁচ জন চিকিৎসকের দল গঠন করা হয়। দলের মধ্যে সার্জিক্যাল ও অ্যানেস্থেশিয়ার চিকিৎসকরাও যোগ দেন।
রাতেই রোগীর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। তাঁরা দ্রুত হাসপাতালে উপস্থিত হন। পরিবারের সদস্যদের অনুমতি নেওয়ার পরই অস্ত্রপচার শুরু করেন চিকিৎসকরা। রোগীকে পূর্ণ অচৈতন্য করে রোগীর শ্বাসনালীতে টিউব দিয়ে কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চালু রাখা হয়। তার পর রোগীর অস্ত্রপচার সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়।