বেশ কয়েকদিন ধরে এক আইসিডিএস কর্মী তথা গৃহবধূকে কুপ্রস্তাব দিয়ে চলেছিল এক যুবক বলে অভিযোগ। ওই বধূ বেশ কিছুদিন সহ্য করার পর যুবকটিকে জানিয়ে দেন যে তাঁকে যেন বিরক্ত করা না হয়। আর এসব কুপ্রস্তাব আর একবার দিলে তা প্রকাশ্যে নিয়ে আসবেন। বধূর কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে তেতে উঠে ওই যুবক। আর এই প্রত্যাখ্যানের জবাব দেবে বলে হুমকিও দেয় বধূকে বলে অভিযোগ। এরপরই প্রতিশোধ নিতে ওই বধূর উপর ‘অ্যাসিড’ হামলা করে ওই যুবক বলে অভিযোগ। এমনকী ওই হামলার পর সে এলাকায় ছেড়ে চম্পট দেয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর এলাকায় এই ঘটনা নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আক্রান্ত বধূর শরীরের একাধিক জায়গা পুড়ে গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গতকাল সন্ধ্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর থানার কৃষ্ণনগর বাজার এলাকায় কাজ করে ফিরছিলেন ওই আইসিডিএস কর্মী তথা বধূ। তখনও প্রতিবেশী যুবক বাপি মাইতি ওই বধূর সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। আর তাঁকে শেষবারের মতো বোঝাতে এসেছে বলে জানায়। কিন্তু ওই বধূ সরাসরি জানিয়ে দেয় এমন সব কুপ্রস্তাব শুনতে তিনি রাজি নন। আর তাঁকে এভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করলে চিৎকার করে লোক জড়ো করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন ওই বধূ। অভিযোগ, কয়েক মাস ধরে ওই বধূকে উত্ত্যক্ত করছিলেন যুবক বাপি মাইতি। কিন্তু ওই বধূ তাতে সাড়া দেননি। তাই বাপি মাইতির আক্রোশ আরও বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে আবার থ্রেট কালচারের অভিযোগ, পুলিশের দ্বারস্থ ছাত্রী
যুবক বাপি মাইতির এই কুপ্রস্তাব সহ্য করতে না পেরে ওই বধূ তাঁর স্বামীকে সব খুলে বলেন। আর কান্নায় ভেঙে পড়েন। রাস্তাঘাটে ওই যুবক বাপি মাইতির কুপ্রস্তাব রোজ সহ্য করতে হচ্ছে। যা তিনি আর পারছেন না সহ্য করতে। এই কথা শুনে ওই বধূর স্বামী ঘটনার প্রতিবাদ করেন। তখন বাপি মাইতি ওই বধূর স্বামীকে মারধর করে বলে অভিযোগ। শুক্রবার রাতে কাজ সেরে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ওই গৃহবধূ। পথে সাইকেল খারাপ হয়ে যায়। তখন একটি দোকানে নিয়ে গিয়ে সেটি সাড়ানোর জন্য দাঁড়ান ওই বধূ। তখন বাপি মাইতি পিছন থেকে তাঁর উপর অ্যাসিড হামলা করে বলে অভিযোগ। অ্যাসিড হামলায় ওই আইসিডিএস কর্মীর শরীরের নানা অংশ পুড়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বাপিকে তাড়া করলেও ধরতে পারেননি।
এই ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত বাপি মাইতি পলাতক। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তারপরই তদন্তে নেমে পড়ে পুলিশ। আর বাপি মাইতির খোঁজ চলছে। ওই বধূকে উদ্ধার করে রুদ্রনগর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়। তারপর একটু স্বস্তিবোধ করতেই রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই বধূ। পুলিশ অভিযুক্ত বাপি মাইতির খোঁজে জোর তল্লাশি চালাচ্ছে। এই ঘটনার পর থেকেই তীব্র আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই গৃহবধূ।