২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে সংগঠন নিয়ে বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন মাসের মধ্যে তিনি সংগঠনের খোলনলচে পাল্টে দেবেন বলে বার্তা দিয়েছিলেন। এবার সেটাই শুরু হল সন্দেশখালি থেকে। শেখ শাহজাহান এখন জেলে। তাও ৬ মাস হয়েছে। এবার শেখ শাহজাহানের পরিবর্তে সন্দেশখালি–১ ব্লকের নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা করল তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। সন্দেশখালি–১ ব্লকের সভাপতি করা হয়েছে মিজানুর রহমানকে। আর সন্দেশখালি–২ ব্লকের সভাপতি হয়েছেন দিলীপ মল্লিক। মিজানুর আগে একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। এখন পঞ্চায়েত সদস্য। আর দিলীপ এখন সন্দেশখালি–২ ব্লকের জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ।
এই ব্লক সভাপতি নতুন করে করার মধ্যে দিয়ে অভিষেকের কথা বাস্তবায়িত হতে শুরু করল। আজ, শনিবার দু’জন ব্লক সভাপতির নাম ঘোষণা করা হল। সন্দেশখালি ইস্যু নিয়ে বিজেপি ফায়দা তুলবে ভেবেছিল। কিন্তু সেটা বাস্তবায়িত হয়নি। বরং বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূল কংগ্রেসই জেতে। এই ফসল ঘরে তোলার ক্ষেত্রে যে দু’জন মাটি কামড়ে পড়েছিলেন তাঁরা হলেন—দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু এবং অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। তাঁরাই নিজেদের মতো করে দক্ষ সংগঠক খুঁজে নাম প্রস্তাব করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দু’জনেই তাতে সম্মতি দিলে আজ ঘোষণা হয়ে যায় নাম।
আরও পড়ুন: ‘মমতার পদত্যাগ করা উচিত’, আরজি কর কাণ্ডের ঘটনায় তোপ দাগলেন নির্ভয়ার মা
সন্দেশখালি নিয়ে যে রাজনীতি হয়েছিল তা ধামাচাপা পড়ে যায় স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো সামনে আসার পর। তারপর হেরে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শক্তিস্বরূপা রেখা পাত্র। এখন আর তাঁকে দেখা যায় না। যদিও ওই ভিডিয়ো যাচাই করে দেখেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল। এই বিষয়ে সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাত বলেন, ‘দিদি সভাপতিদের নামে সম্মতি দেওয়ায় রাজ্য সভাপতি তাঁদের নামে অনুমোদন দিয়েছেন। আর সুজিত বসু নতুন ব্লক সভাপতিদের নিয়োগপত্র দিয়েছেন। সুতরাং সন্দেশখালির দুটি ব্লকেই সাংগঠনিক কাজকর্ম করতে এবার আমাদের সুবিধা হবে।’ ২৯ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হন শাহজাহান। তার পর থেকেই শূন্য ছিল এই দুই ব্লকের সভাপতির পদ।
এই নতুন দুই সভাপতি নিয়োগের পর তৃণমূল কংগ্রেসের পাখির চোখ ২০২৬ সালে সন্দেশখালি বিধানসভা জিতে নেওয়া। এই বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হাজি নরুল ইসলাম বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রকে হারিয়ে ৩ লক্ষ ৩২ হাজার ৯৪৯ ভোটে জয়ী হলেও সন্দেশখালি বিধানসভায় বিজেপি ৮ হাজার ৩৮৭ ভোটে এগিয়ে আছে। এটা মেকআপ দিতে হবে। এখানে শাহজাহানের অনুগামীদের অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল। তার জেরে শাহজাহান ঘনিষ্ঠ দুই নেতা উত্তম সর্দার এবং শিবু হাজরাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখন থেকেই এই দুটি ব্লকের সভাপতি ছিল না। লোকসভা নির্বাচন মিটে যাওয়ার তিন মাসের মধ্যেই সন্দেশখালির দুটি ব্লকেই নতুন সভাপতি নিয়োগ করল তৃণমূল কংগ্রেস।