আবার সংবাদে উঠে এল সন্দেশখালি। এবার বিতর্ক দানা বেঁধেছে নতুন জেটিঘাট তৈরি করার বিষয়ে। এই সন্দেশখালিতে এখন দেদার ম্যানগ্রোভ নিধন করা হচ্ছে বলে উঠল অভিযোগ। আর সেই ম্যানগ্রোভ কেটে নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে নয়া জেটিঘাট বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে সন্দেশখালি ১ ব্লকের সেহরা–রাধানগর পঞ্চায়েতের ডাসা নদীর পাড় থেকে। আর গোটা বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয় গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক সুকুমার মাহাতো এই জেটিঘাট গড়ে তুলতে নদীর পাড়ের ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করছেন। পুরনো নষ্ট জেটিঘাটের জায়গায় নতুন তৈরি করলে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করতে হতো না। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক।
স্থানীয় সূত্রে খবর, জেটিঘাট নিশ্চয়ই দরকার আছে। কিন্তু সেটা এভাবে গড়ে তুললে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হবে। ডাসা নদীর তীরে জেটিঘাট আছে। যা নিয়ে সমস্যাও আছে। দীর্ঘদিনের পুরনো একটি জেটিঘাট আছে। যার সংস্কার না হওয়ায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তাই নতুন করে জেটিঘাট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সেই কাজ করতে গিয়েই ধ্বংস করা হচ্ছে ম্যানগ্রোভ বলে অভিযোগ। জেটিঘাট তৈরি করতে গিয়ে নদীর পাশের ম্যানগ্রোভ কেটে ফেলা হয়েছে। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিবাদ করছেন। এই এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ‘পুরনো জায়গা ফেলে রেখে নতুন জায়গায় জেটিঘাট তৈরি করা হচ্ছে। যার জেরে অনেক ম্যানগ্রোভ কাটা পড়ছে।’
আরও পড়ুন: প্রত্যেক সপ্তাহে সমস্ত দফতরের রিপোর্ট পাঠাতে হবে, মন্ত্রীদের নির্দেশ দিলেন মমতা
সন্দেশখালি আগে একবার অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল। যা পরে ঠাণ্ডা হয়। এবার আবার নতুন জেটি তৈরি নিয়ে সরগরম হচ্ছে সন্দেশখালি। শ্মশান ও সমাধি নতুন জেটির পাশে থাকায় মানুষের যাতায়াত করা নিয়ে আপত্তি আছে। বরং পুরনো জেটিঘাট ভেঙে নতুন করে তৈরি করলে অনেক সুবিধা হতো। এই বিষয়ে সেহারা–রাধানগর পঞ্চায়েতের প্রধান দীপালি মণ্ডলের বক্তব্য, ‘নতুন জায়গায় জেটিঘাট তৈরির সিদ্ধান্ত বিধায়কের। আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি।’ সন্দেশখালির বিজেপি নেতা পলাশ সরকারের অভিযোগ, ‘ম্যানগ্রোভ কেটে নতুন জেটিঘাট নির্মাণ হোক সেটা আমরা চাই না।’
সত্যিই কি ম্যানগ্রোভ নিধন করা হচ্ছে? ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে গড়ে উঠছে জেটিঘাট? বিধায়ক কি এই কাজের সঙ্গে যুক্ত? এখন এসব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও এই বিষয়ে বিধায়ক সুকুমার মাহাত বলেন, ‘ওখানে একটাও গাছ ছিল না। তাই ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করার প্রয়োজনই নেই। জায়গাটা ফাঁকা পড়ে ছিল। আর সেই ছবিও আমরা তুলে রেখেছি। যাতে প্রমাণ থাকে। সুতরাং গাছ কেটে জেটিঘাট গড়ার কোনও প্রশ্ন নেই। যাঁরা এসব কথা বলছেন, আসলে তাঁরা এলাকার উন্নয়ন চাইছেন না। আর নতুন জেটিঘাট তৈরি প্রায় তিন বছর আগের প্রকল্প। এখন কেন তাতে আপত্তি উঠছে? বিরোধীদের মদতে কিছু লোকজন এই কাজ করছেন।’