মাত্রাছাড়া দূষিত হয়ে গিয়েছে সাঁতরাগাছি ঝিলের জল। এমনই তথ্য উঠে এসেছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্টে। যেখানে সাধারণত ১০০ মিলিলিটার জলে ৫০ এমপিএন কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া থাকার কথা, সেখানে সাঁতরাগাছি ঝিলে তা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৭০ হাজার এমপিএন! সেক্ষেত্রে এখন এই ঝিলের জল ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, জলজ প্রাণীদের ক্ষেত্রেও তা চূড়ান্ত ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।
সম্প্রতি দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এই ঝিলের জলে দূষণের মাত্রা জানতে নমুনা পরীক্ষা করায়, এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। এপ্রসঙ্গে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘জলের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টেই স্পষ্ট, সেখানে দূষণ কী বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছেছে!’ এক পরিবেশবিজ্ঞানীর কথায়, ‘জলের মানোন্নয়নের জন্য অবিলম্বে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা দরকার।’
উল্লেখ্য, জলের গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য জলে কী পরিমাণ জীবাণু মজুত আছে, তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। মূলত খাল, বিল, পুকুরের জলে দু’ধরণের ব্যাকটেরিয়া মেলে। কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া ও ফোকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া। কত পরিমাণে এই ব্যাকটেরিয়া জলে মজুত রয়েছে তার পরিমাণের উপর নির্ভর করে যে জল কতটা দূষিত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের মাপকাঠি অনুযায়ী, জলের গুণগত মান ও ব্যবহারের দিক থেকে পাঁচটি বিভাগ রয়েছে। তার মধ্যে ‘এ’ বিভাগের ক্ষেত্রে জলে মোট কলিফর্ম প্রতি ১০০ মিলিলিটারে ৫০ এমপিএন বা তার কম থাকার কথা। বিভাগ ‘বি’-এর ক্ষেত্রে মোট কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া প্রতি ১০০ মিলিলিটার জলে ৫০০ এমপিএন বা তার কম থাকার কথা ও ক্যাটেগরি ‘সি’-এর ক্ষেত্রে মোট কলিফর্ম প্রতি ১০০ মিলিলিটারে ৫ হাজার এমপিএন বা তার কম থাকার কথা।
সেক্ষেত্রে সাঁতরাগাছি ঝিলের জল পরীক্ষার রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, প্রতি ১০০ মিলিলিটার জলে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ ৭০ হাজার এমপিএন কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া আছে। আর ১০০ মিলিলিটার জলেই আবার ফোকল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া সংখ্যা ২০ হাজার এমপিএন রয়েছে।জলদূষণের এই মাত্রায় স্পষ্ট যে, বিপজ্জনক ভাবে সাঁতরাগাছি ঝিলের জল দূষিত হয়েছে। এই জল ব্যবহারের অযোগ্যই শুধু নয়, জলজ প্রাণীদের ক্ষেত্রেও ক্ষতিকর।