এবার পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে গোটা দুর্গাপুরের ৪১টি ওয়ার্ড–সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে। গত শনিবার দুর্গাপুর ব্যারেজের ৩১ নম্বর লকগেট ভেঙে জলশূন্য হয়ে যায় দুর্গাপুর ব্যারেজ। রবিবার থেকে পানীয় জলের পাইপ লাইনে জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে পানীয় জলের সংকট দেখা দিতে শুরু করে দুর্গাপুর জুড়ে। সোমবার জলের সংকট প্রভাব ফেলেছে শিল্পেও। জলের অভাবে শিল্পনগরী দুর্গাপুর আপাতত স্তব্ধ।
এই পরিস্থিতিতে ত্রাতার ভূমিকা নিয়েছে রাজ্য সরকার। এদিন জলের পাউচ–সহ মোবাইল ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এবং জলের ট্যাঙ্ক এনে জল দিতে শুরু করেছে পষ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়ায়। সরকারের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, জলের চাপেই ব্যারেজের লকগেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৯৬০ সালে এই ব্যারেজটি তৈরি করে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন।তারপর তা পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে হস্তান্তর করা হয়। এই ব্যারেজের ৩৪টি গেট আছে।
পানীয় জলের সংকট চরমে ওঠায় তৎপর প্রশাসন। দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্তি জানান, ব্যারেজে সমস্যা হওয়ার ফলে দুর্গাপুর জুড়ে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিলেও তা দ্রুত মোকাবিলা করেছে কর্পোরেশন। আমরা সব ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত জলের ট্যাঙ্ক পাঠিয়ে পানীয় জলের সংকট দূর করার চেষ্টা করেছি। সেচ দফতরের আধিকারিক সঞ্জয় সিং জানান, সোমবারের মধ্যে বাধে কাজ শেষ করে মঙ্গলবার লকগেট সারিয়ে ফেলা হবে। মঙ্গলবারের মধ্যে দুর্গাপুরে পানীয় জলের সরবরাহ স্বাভাবিক করে ফেলা হবে।পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে কাজ চলছে।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর ইতিমধ্যেই ১.২৫ লক্ষ জলের পাউচ পশ্চিম বর্ধমান জেলায় এবং ৫০ হাজার পাউচ আলাদা করে রাখা রয়েছে। প্রয়োজন পড়লে তাও সরবরাহ করা হবে।চারটি মোবাইল ট্রিটমেন্ট ইউনিট বসানো হয়েছে। যার ক্ষমতা এক ঘন্টায় ২০ হাজার জলের পাউচ তৈরি করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্তি মানুষের কাছে আবেদন করেছেন, ‘দয়া করে জল নষ্ট করবেন না।’
বাঁকুড়া পুরসভা এলাকায় সমস্যা তৈরি হতে পারে এই আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই বাঁকুড়া শহর–সহ জেলার তিনটি ব্লকে মোট ৩৬টি ট্যাঙ্কারে করে পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর আজ থেকে জেলায় তিনটি মোবাইল ট্রিটমেন্ট ইউনিটকে কাজে লাগিয়েছে। এই তিনটি মোবাইল ট্রিটমেন্ট ইউনিট প্রতি ঘণ্টায় ১৫ হাজার জলের পাউচ তৈরি করতে সক্ষম। প্রাথমিকভাবে এই তিনটি ইউনিটের সাহায্যে মোট ৪০ হাজার জলের পাউচ তৈরি করে রেখেছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর।