একেই জল সংকট, তার ওপর ধসের ফলে জোড়া বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বেলগাছিয়া ভাগাড় বা ডাম্পিং গ্রাউন্ড সংলগ্ন এলাকায়। দফায়-দফায় সেখানে ধস নামার ফলে রাস্তা এবং একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। যার ফলে এই এলাকা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। ইতিমধ্যে ৩০টি পরিবারকে নিরাপদে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার এই ভাগাড় নিয়ে ভয়ংকর আশঙ্কার কথা জানালেন ভূবিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন: জলসঙ্কটের পর বিপর্যয় বেলগাছিয়ায়, ভাগাড়ে ধস, ফাটল বাড়িতে, পরিদর্শনে অরূপ
রবিবার ভূবিজ্ঞানীদের একটি দল বেলগাছিয়া ভাগাড় পরিদর্শন করেন। ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট এয়ার অ্যান্ড ওয়াটারের বিজ্ঞানীরা বেলগাছিয়া ভাগাড়ে যান। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে করে এয়ার অ্যান্ড ওয়াটারের সভাপতি সাধনকুমার ঘোষ আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ভাগাড় বন্ধ না হলে আগামিদিনে বিরাট ক্ষতি হতে পারে। কমপক্ষে ১ কিমি এলাকা জুড়ে ধস নামতে পারে। এর ফলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
তিনি জানিয়েছেন, সাধারণত কোনও বহুতল তৈরি করতে গেলে মাটির ধারণক্ষমতার মধ্যেই তৈরি করতে হয় বা বাড়িয়ে তৈরি করা হয়। কিন্তু, এই ভাগাড়ের ক্ষেত্রে সেরকম কোনও পরিকাঠামো নেই। দীর্ঘদিন ধরে প্রচুর পরিমাণে বর্জ্য জমতে জমতে এখানকার মাটির ধারণ ক্ষমতা সীমা ছড়িয়ে গিয়েছে। এ রফলে বড়সড় বিপদ ঘটতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেছেন। এছাড়াও, ভাগাড়ে প্রচুর পরিমাণে মিথেন তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ভাগাড়ে নিচে মাটিতে মিথেন গ্যাস তৈরি হওয়ার ফলে মাটি ফুলে উঠছে। আর এর ফলে ধসের মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তারওপর আবার গঙ্গা ভাগাড়ের কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ায় নদীর জল মিশছে মিথেন গ্যাসের সঙ্গে। ফলে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।
ভূবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিন ধরে ভাগাড়ে মৃতদেহ ও বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। সেই বর্জ্য বা মৃত পশু পাখির দেহের রস মাটিকে নষ্ট করে দিয়েছে। এই সব কারণে মাটির তলা ফুলে উঠছে। এই অবস্থায় বিজ্ঞানীরা দ্রুত সেখান থেকে ভাগাড় সরানোর কথা বলছেন। এছাড়াও, মাটিতে গর্ত করে মিথেন গ্যাস বের করার পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। প্রসঙ্গত, গতকাল মন্ত্রী অরূপ রায় ভাগাড় এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি আশ্বস্ত করেছেন দ্রুত ভাগাড় এখান থেকে সরানো হবে। সেবিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে।