১২৫ বছরের প্রাচীন জোড়া নারকেল গাছের দু’টি সম্ভাবনাময় বীজ সংরক্ষণ করতে সফল হলেন বাংলার উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা। বর্তমানে কড়া পাহারায় বীজগুলি সংরক্ষিত হচ্ছে শিবপুরের আচার্য জদগীশচন্দ্র বসু জাতীয় বট্যানিক গার্ডেনে।
জানা গিয়েছে, দেশে এই প্রজাতির একমাত্র একটি গাছই টিকে রয়েছে, যা বট্যানিক গার্ডেনে রয়েছে। তবে এবার এই প্রজাতির আরও অনেক গাছ তৈরি করা যাবে বলে আশাবাদী বট্যানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর আশিহো আসোসি মাও।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিরল প্রজাতির এই নারকেল গাছের দ্বিতীয় প্রজন্ম তৈরি করার লক্ষ্যে কাজ শুরু হয় ২০০৬ সাল থেকে, যখন একমাত্র জীবিত গাছটির বয়স ছিল ৯৪ বছর। স্ত্রী গাছটিতে পরাগ সঞ্চার করার জন্য শ্রীলঙ্কা রয়্যাল বট্যানিক গার্ডেনের এই প্রজাতির গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় রেণু।
সেই পরীক্ষা অসফল হলে ২০১৩ সালে ফের চেষ্টায় নামেন বিজ্ঞানীরা। এবার রেণু জোগাড় করা হয় থাইল্যান্ডের গাছ থেকে। দ্বিতীয় বারের প্রয়াস আর ব্যর্থ হয়নি।
দুর্ভাগ্যবশত মা গাছটি এবার ছত্রাক সংক্রমণের শিকার হয়। শেষ পর্যন্ত তাকে উদ্ভিদচিকিত্সার অন্তর্গত ‘ইন্টেন্সিভ কেয়ার’ বিভাগে রেখে কোনও রকমে বাঁচানো সম্ভব হয়।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রথমটি এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় বীজটি তৈরি হয়। বীজগুলি চূড়ান্ত কড়া পাহারায় উদ্যানের গোপন কোনে সংরক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাও। বীজের খবর জানেন শুমাত্র তিনি, উদ্যানের কিউরেটর বিজ্ঞানী এস এস হামিদ এবং বট্যানিক গার্ডেনের উচ্চপদজস্থ এক কর্তা।
সারা বিশ্বে জোড়া নারকেল গাছের এই বিরল প্রজাতির গাছ একমাত্র আফ্রিকার সেশেলস দ্বীপপুঞ্জের দু’টি দ্বীপে পাওয়া যায়। এই প্রজাতির গাছগুলি ১,২০০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। গাছগুলিতে যে ফল হয়, তা উদ্ভিদ জগতে বৃহত্তম- এক একটি ফলের ওজন ২৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। এই গাছের পাতাগুলিও সুবৃহত্।