সোমবার থেকে বিভিন্ন দাবি–দাওয়াতে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে শুরু হয়েছে ৭২ ঘণ্টা ব্যাপী ট্রাক ধর্মঘট। পুজোর মুখে ধর্মঘটের এই তিনদিন রাজ্য থেকে যেমন ভিনরাজ্যে পণ্যবাহী ট্রাক যাবে না, তেমনই বাইরের রাজ্যের ট্রাকও এই রাজ্যে প্রবেশ করবে না৷ প্রথম দিনই রাজ্যের ৬ জেলায় ধর্মঘটের আংশিক প্রভাব পড়েছে। আচমকা সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার জেরে অগ্নিমূল্য হতে পারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম৷ এমনিতেই আলু, পেঁয়াজ–সহ বিভিন্ন সবজির দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী৷
ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের (FWBTOA) সভাপতি সুভাষ বসু জানান, মূলত অন্যান্য রাজ্যের মতো ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত এক্সেল লোড চালু করার দাবিতে এই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পিটিআই–কে তিনি জানিয়েছেন, অন্যান্য সব রাজ্যেই নিরাপদ এক্সেল লোড বহন করার সংশোধিত নিয়ম কার্যকর হয়েছে। শুধু বাকি রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তাঁর দাবি, কয়েকটি বাদ দিয়ে এই ধর্মঘটের সমর্থনে রাজ্যে প্রায় ৬ লক্ষ ট্রাক রাস্তায় নামেনি।
রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, এই ধর্মঘটের জেরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহণ এখনও পর্যন্ত ব্যাহত হয়নি। যদিও পরিবহণ দফতরের ডিরেক্টর বি দত্ত বলেন, ‘জলপাইগুড়ি, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, নদিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুর— এই ৬ জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে এই ধর্মঘটের আংশিক প্রভাব দেখা গিয়েছে। রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলে এই ধর্মঘটের কোনও প্রভাব পড়েনি। আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরগুলিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন ইতিমধ্যে টোল প্লাজায় আদায় করা শুল্ক প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছে। তাদের আরও কিছু দাবি–দাওয়া রয়েছে। যেমন, লোডিং পয়েন্ট থেকে ওভারলোড বন্ধ করতে হবে। ট্রাকের ওপর ডাক পার্টি, ট্যাগ পার্টি, থানায় থানায় মাসিক পুলিশকে টাকা দেওয়া, এম ভি আই ভিয়েলারো এবং বালি–পাথর মাফিয়ার দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে৷ পাশাপাশি মোটর ভেহিকেলসের বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরের অকারণ হয়রানি বন্ধ করতে হবে৷
এদিকে ট্রাক মালিকদের অভিযোগ, পুলিশের চাহিদা মতো টাকা না দেওয়া হলে পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে কেস দিয়ে জরিমানা আদায় করছে। এছাড়া নো এন্ট্রির নামে পুলিশের অত্যাচার বাড়ছে। পাশাপাশি সেচ দফতর এবং বিএলআরও–র জুলুম চলছে।