তৃণমূল কংগ্রেস বিরুদ্ধে বরাবরই কাটমানি তোলার অভিযোগ তুলে এসেছে বিরোধীরা। এবার কাটমানির বিরুদ্ধে তৃণমূলেরই একাংশ সরব হয়েছে। তার জেরে অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল শিবির। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে প্রচারে নেমেছে তৃণমূলের একাংশ।
আবার তৃণমূল পরিচালিত পুর এলাকায় কাটমানি বিরুদ্ধে প্রচারে নামায়, তৃণমূলের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে বিজেপি। তবে তৃণমূলের ওই অংশের অভিযোগ, সরকারি প্রকল্পের যে কোনও কাজে সক্রিয় রয়েছে দালাল চক্র। তা সে যে কোনও দলেরই হোক না কেন, দালাল চক্রকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।
মঙ্গলবার পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি-সহ দলের বেশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থক টোটোয় চড়ে কাটমানি বিরোধী প্রচার শুরু করেন। দেখা গিয়েছে, একটি টোটোতে তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে গোটা ওয়ার্ড চষে বেড়াচ্ছেন ওয়ার্ড সভাপতি। টোটো মাইক লাগিয়ে সেখান থেকে মাইকিং করছেন তিনি। বলছেন, ‘সরকারি কোনও প্রকল্পের সুবিধা পেতে কোনও দালাল অথবা কোনও দলীয় কর্মীকে টাকা বা কাটমানি দেবেন না। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া আপনার অধিকার। তাই কারও মিথ্যে প্ররোচনায় পা দেবেন না।’
এর সাফাই দিতে গিয়ে তৃণমূলের সভাপতি অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের প্রচারের এইরকম কোনও উদ্দেশ্য নেই। সাধারণত সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তাদের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। সেই সুযোগেই দালালচক্র গজিয়ে উঠেছে। তবে সেই চক্রের পান্ডারা বিভিন্ন দলের হতে পারে। সেটা তৃণমূলই হোক কিংবা বিজেপি হোক বা সিপিএমের, দল নির্বাচন করে দালাল তৈরি হয় না। সেক্ষেত্রে দালাল যে দলেরই হোক, সাধারণ মানুষ যাতে এই চক্রের খপ্পরে না-পড়েন, সেই কারণেই এই প্রচার।’
অপরদিকে রঘুনাথপুর পৌরসভার প্রশাসক মদনমোহন বরাট জানিয়েছেন, তাঁর আমলে সরকারি কোনও কর্মী কাটমানি নেননি। তিনি আরও জানিয়েছেন, এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে, দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। এর বিরোধিতা করে কটাক্ষের সুরে বিজেপি জেলা সম্পাদক বাণেশ্বর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘তৃণমূল আর কাটমানি সমার্থক শব্দ। তৃণমূল সরকারের কাজই হল কাটমানি নেওয়া। এতদিন আমরা অভিযোগ করতাম। এবার নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বেড়াচ্ছে।’