রাজ্যে কোভিডের দৈনিক সংক্রমণ ২০ হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কলকাতা তো বটেই বিভিন্ন জেলাতে এই মারণ ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই কারণে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন বাজার হাট বন্ধের উদ্যোগ নিচ্ছে। তবে করোনার এই রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করেই কিছুতেই বাজার হাট বন্ধের নির্দেশ মেনে নিচ্ছেন না হাওড়ার মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জেলা প্রশাসন আজ মঙ্গলবার বাজার বন্ধ করতে পেরেছে। কিন্তু তারপরেও অনেক ব্যবসায়ীকে এদিন দোকান খুলে রাখতে দেখা যায়। যদিও পরে পুলিশ গিয়ে দোকান বন্ধ করে দেয়।
হাওড়ার মঙ্গলাহাটের বাজার জনবহুল হওয়ায় সেখানে প্রতিদিন বহু মানুষের ভিড় হয়। ফলে এই বাজার থেকে করোনা সংক্রমন ছড়ানোর আশঙ্কা অনেক বেশি। সেই কারণে জেলা প্রশাসনের পরিকল্পনা ছিল প্রতি সপ্তাহে অন্তত তিনদিন করে বাজার বন্ধ করা। ব্যবসায়ীদের সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশের প্রতিবাদে কোভিডের আশঙ্কা উড়িয়ে রীতিমতো বিক্ষোভে বসেছিলেন মঙ্গলকোটের ব্যবসায়ীরা। কোনা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেন তারা।
সোমবার হাওড়া ময়দানের এই বাজার বন্ধের কথা থাকলেও দোকান খোলা রেখে ছিলেন ব্যবসায়ীরা। গত সপ্তাহের পর এসপ্তাহেও হাওড়ার পুলিশ প্রশাসন, পুরসভা এবং জেলা প্রশাসন সেখানকার ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু, বৈঠকে কোনও সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি।
ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, এমনিতেই দীর্ঘ লকডাউন থাকার ফলে তাদের ব্যবসায়ী চরম ক্ষতি হয়েছে। এই অবস্থায় আর কোনওভাবেই তারা বাজারে বন্ধ রাখতে পারবেন না। ফলে এ সপ্তাহে মঙ্গলবার বাজার বন্ধ থাকলেও আগামী সপ্তাহে আদৌও বাজার বন্ধ রাখা হবে কিনা তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে হাওড়া পুরসভা প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারপারসন সুজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন।
ব্যবসায়ীদের দাবি, তারা কোভিড বিধি মেনেই বাজার হাট খোলা রাখবেন। ক্রেতাদের প্রয়োজনে কোভিড বিধি মেনে চলার অনুরোধও জানাবেন। তবে কোনও ভাবে তারা বাজার বন্ধ রাখতে পারবেন না বলে মঙ্গলাহাট সমন্বয় ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সম্পাদক কানাই পোদ্দার জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের মতে, এই হাটে প্রতিদিন প্রচুর লোক আসেন বিভিন্ন জেলা থেকে। ফলে বাজার বন্ধ না হলে শুধু যে হাওড়াতে সংক্রমণ ছড়াবে তাই নয়, অন্য জেলাগুলোতেও সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থায় বাজার বন্ধ না হলে সে ক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন প্রশাসনিক কর্তারা।