আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগের কিনারা এখনও হয়নি। তারই মধ্যে আরও এক তরুণ চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় দানা বাঁধল রহস্য।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের ঘটনার নেপথ্যে একদিকে যেমন ইদানীংকালে বহু চর্চিত 'থ্রেট কালচার'কে দায়ী করা হচ্ছে, অন্যদিকে এর পিছনে সম্পর্কের কোনও টানাপোড়েন রয়েছে কিনা, সেই প্রশ্নও উঠছে।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামের একটি গেস্ট হাউসের (মতান্তরে হোটেল) পাঁচতলার একটি ঘর থেকে দীপ্র ভট্টাচার্য নামে এক যুবককে 'অচেতন অবস্থায়' উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই দীপ্র ভট্টাচার্য আদতে কলকাতার বেহালার বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে থাকতেন ঝাড়গ্রামে। ঝাড়গ্রাম হাসপাতালের অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত ছিলেন তিনি।
ওই হাসপাতালের আরও কয়েকজন চিকিৎসকের মতো দীপ্রও সংশ্লিষ্ট গেস্ট হাউসে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন। সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে ঝাড়গ্রাম ফিরে সেই ভাড়ার ঘরে চলে যান তিনি।
কিন্তু, তারপর দীর্ঘক্ষণ তাঁর কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। যার জেরে তাঁকে নিয়ে চিন্তায় পড়েন বাকিরা। পরবর্তীতে ওই ভাড়া ঘরের দরজা ভেঙে দীপ্রকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বলে দাবি করা হচ্ছে। এবং এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
সংবাদমাধ্যমের একাংশের তরফে দাবি করা হচ্ছে, ঘটনাস্থল থেকে নাকি কেটামাইন ইনজেকশন ও একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে।
এই অংশেরই দাবি, মৃত্যুর আগে স্ত্রীকে মেসেজ পাঠিয়েছিলেন দীপ্র! তাতে লেখা ছিল, 'আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারিনি। পুরনো ক্ষত থেকে বেরোতে পারলাম না। আমি ফাঁদে পড়ে গিয়েছিলাম। বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলাম। তুমি মুভ অন করে যাও। তুমি কাঁদবে না, নতুন করে জীবন শুরু করো।'
এই মেসেজের কারণেই আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই ঘটনার নেপথ্যের ব্যক্তিগত কোনও কারণ থাকতে পারে। অন্যদিকে, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মৃত্যুর আগে একাধিক নম্বরে একটি মেসেজ পাঠিয়েছিলেন দীপ্র! যাতে 'থ্রেট কালচার'-এর স্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল!
ওই মেসেজে লেখা হয়েছিল, 'যারা ছাত্রদের ভয় দেখায়, স্বজনপোষণকে সমর্থন করে, উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের তেল মারে তারা সন্দীপ ঘোষের থেকে কোনও অংশে কম নয়।'
তাতে আরও লেখা ছিল, 'তোমরা সকলেই দায়ী। তোমাদের সকলের হাতে রক্ত লেগে।'
যে দুই ধরনের মেসেজের উল্লেখ এখানে করা হয়েছে, আপাতত তা নিয়েই ধোঁয়াশা শুরু হয়েছে। তাছাড়া, ওই মেসেজগুলি আদৌ দীপ্রই লিখেছিলেন কিনা, সেটাও এখনও স্পষ্ট নয়।
অন্যদিকে, পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত ডা. দীপ্র ভট্টাচার্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব নয়।