ভোট মিটলেও বাংলায় কেন্দ্রীয় সরকার নয়া নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনও উদ্যোগ দেখাচ্ছে বলে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে একাংশের মনে। এই পরিস্থিতিতে মতুয়াদের নতুন করে নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সহযোগিতা চাইছেন বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর।তবে মতুয়াদের এভাবে নতুন করে নাগরিকত্বের আবেদন করা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন বনগাঁর প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর।তাঁর প্রশ্ন, কেন মতুয়াদের নতুন করে আবেদন করতে হবে।বরং কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করুক, মতুয়ারা সবাই এদেশের নাগরিক।
বিধানসভা ভোটের আগে এই রাজ্যে প্রচারে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছিলেন, বিধানসভা ভোট মিটলে ও করোনার টিকাকরণের কাজ শেষ হলে নয়া নাগরিকত্ব আইন মোতাবেক মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।যদিও ভোটের প্রচারে গিয়ে মতুয়াদের নতুন করে নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন, মতুয়ারা তো এই দেশের নাগরিকই।তাঁরা তো এর আগেও নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। ফলে নতুন করে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার মানে কী?উল্টে তৃণমূল নেত্রী পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই রাজ্যে এনআরসি ও সিএএ কার্যকর তিনি কোনও অবস্থাতেই করতে দেবেন না।ভোটে অবশ্য মতুয়াদের সমর্থন বিজেপির দিকেই গিয়েছিল।
কিন্তু রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এই পরিস্থিতিতে মতুয়াদের নতুন করে নাগরিকত্বের বিষয়টি তাহলে কী হবে।এই প্রশ্নই এখন মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।এই পরিস্থিতিতে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর তরফে এখনও পর্যন্ত সহযোগিতার কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি।বিষয়টিকে রাজনৈতিকভাবে না দেখে মুখ্যমন্ত্রীকে সহানুভূতির সঙ্গে দেখার আর্জি জানিয়েছেন।তাঁর আশঙ্কা, মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি না পেলে এই রাজ্যে নয়া নাগরিকত্ব আই কার্যকর করা অসম্ভব।আইন কার্যকর হলে গোলমাল শুরু হবে, রাষ্ট্রীয় সংহতি নষ্ট হবে।
শান্তনু ঠাকুরের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন বনগাঁর প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর।তাঁর মতে, মতুয়াদের নতুন করে নাগরিকত্ব পেতে আবেদন করতে হবে কেন।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই তো মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষরা এখানে ভালো আছেন।একইসঙ্গে কেন্দ্রের সমালোচনা করে বনগাঁর প্রাক্তন সাংসদ জানান, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ ১৯৫৫ সালের আইন অনুযায়ী, যা নয়া নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার ধাপ।পঞ্জাবের জলন্ধর ও হরিয়ানার ফরিদাবাদে পূর্ব বাংলা থেকে আসা প্রচুর মানুষ বসবাস করেন।তাঁদের বলা হয়েছে নাগরিকত্বের জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে আবেদন করতে।তবে বাকিদের জেলাশাসকের কাছে আবেদন করতে বলা হয়েছে।এই দুই রকমের নিয়ম কেন?