আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে গোটা রাজ্যজুড়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। নিরাপত্তার দাবি উঠতে শুরু করেছে সর্বত্র। এবার পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে ট্যুরিস্ট পুলিশ রাখার ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। এই ট্যুরিস্ট পুলিশের কাজ প্রথম শুরু হচ্ছে শান্তিনিকেতনকে দিয়ে। কারণ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় স্থান পেয়েছে শান্তিনিকেতন। এখানে দেশ–বিদেশ থেকে মানুষজন আসে। তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, নিরাপত্তার অভাববোধ না করেন তার জন্যই এমন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সামনে দুর্গাপুজো। তারপর শীতকাল। তাই এখানে পর্যটকদের ভিড় বাড়বে। তাই বীরভূম জেলা পুলিশের উদ্যোগে শুরু হল টুরিস্ট পুলিশ কার্যক্রম।
এই ট্যুরিস্ট পুলিশ এখন শান্তিনিকেতন থেকে কাজ শুরু করলেও পরে প্রত্যেক জেলায় তা রাখার ব্যবস্থা করা হবে। যাঁরা পর্যটকদের নিরাপত্তা দিয়ে থাকবেন। আশ্রম চত্বর থেকে শুরু করে সোনাঝুরি হাট সংলগ্ন এলাকায় টহল দেবে পুলিশ। আর বাকি দর্শনীয় স্থানেও থাকবে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ১৮ জন সিভিক ভলান্টিয়ার এবং পুলিশ কর্মীদের যৌথভাবে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই টুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বোলপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায়, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রিকি আগরওয়াল এবং পুলিশ টিমের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: ঘুটিয়ারি শরিফ স্টেশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, আপাতত বন্ধ ট্রেন চলাচল, পরিষেবা বিপর্যস্ত
এই ট্যুরিস্ট পুলিশের টিমে মহিলাও থাকছেন। যাতে মহিলা পর্যটকরা নিজেদের অভাব অভিযোগ মহিলা ট্যুরিস্ট পুলিশকে জানাতে পারেন। দুটি মোটরবাইকে করে পুলিশ কর্মীরা শান্তিনিকেতনের আশ্রম চত্বর, সোনাঝুরি, শ্রীনিকেতন এবং বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে পর্যটকদের পরিষেবা দেবে। আর সোনাঝুরি হাট,পোস্ট অফিস মোড় এমনকী আশ্রম চত্বরে ২৪ ঘণ্টা পুলিশের নজরদারি থাকবে। পর্যটকদের সুবিধার্থে একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। হেল্পলাইন নম্বরটি হল—৭৮১২০০১১২০। এখানে ফোন করলেই দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীরা প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবেন বলে জানিয়েছেন বোলপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
এটা প্রাথমিকভাবে শুরু হলেও প্রত্যেক জেলার পর্যটনকেন্দ্রে রাখা হবে ট্যুরিস্ট পুলিশ। যাতে নিরাপত্তা আরও নিশ্ছিদ্র করা যায়। এই বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘শান্তিনিকেতন নিয়ে বরাবরই আগ্রহ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর চেষ্টায় উদ্বোধন করা হল টুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম। দেশ–বিদেশের পর্যটকদের সম্পূর্ণ সুরক্ষার পরিবেশ দিতে বদ্ধপরিকর জেলা পুলিশ প্রশাসন। টুরিস্ট পুলিশ গার্ড ১৮ জন পুলিশ কর্মী দুটি মোটরবাইকে করে সর্বত্র সহায়তা দিতে ঘুরবেন। সারা বছর ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা দেবেন। কর্মীরা টুরিস্ট পুলিশ লেখা জ্যাকেট পড়ে থাকবেন। যাতে সহজেই চিহ্নিত করতে পারে সকলে।’