শান্তিনিকেতন: একে একে শান্তিনিকেতনের (Shantiniketan) বহু ঐতিহ্যই অবলুপ্তির পথে। রিসর্ট, হোটেলের কালচারে এবার শান্তিনিকেতনের পুরোধা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাইপো অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Abanindranath Tagore) বাড়ির উপরেও কোপ পড়ল। ভেঙে ফেলা হচ্ছে তাঁর ঐতিহ্যমণ্ডিত বাড়ি (Abanindranath Tagore House)। কেন? জানা যাচ্ছে, ওই স্থানে একটি বহুতল আবাস নির্মিত হবে।
আরও পড়ুন - Sexual harrasment: কর্মক্ষেত্রে অধ্যাপিকাকে যৌন হয়রানি, ৬ বছর আগের মামলায় পুনরায় তদন্তের নির্দেশ
প্রোমোটারদের দখলে চলে যাবে শান্তিনিকেতন?
গুরুদেবের বিশ্বভারতীতে দ্বিতীয় উপাচার্য ছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর পুত্র অলকেন্দ্রনাথ ঠাকুর তৈরি করেছিলেন এই বাড়িটি। জীবনের শেষ দিকে বেশ কিছুদিন এই বাড়িতে কাটিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শুধু তাই নয়, তাঁর নাম অনুসারে ওই স্থানটির নাম হয়েছিল অবনপল্লী। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ির ঠিক সামনেই বাড়ি রাষ্ট্রপতিপুরস্কারপ্রাপ্ত অধ্যাপক তথা বৌদ্ধপণ্ডিত সুনীতিকুমার পাঠকের। বাড়ি ভেঙে ফেলার এই গোটা ঘটনায় বিক্ষুব্ধ আশ্রমিক ও স্থানীয়রা। প্রশ্ন উঠেছে, এভাবেই কি ধীরে ধীরে প্রোমোটারদের দখলে চলে যাবে শান্তিনিকেতন?
আরও পড়ুন - ট্যাংরায় একই পরিবারের ৩ জনের দেহ উদ্ধার, চাঞ্চল্যকর দাবি গোয়েন্দা প্রধানের
ক্ষুব্ধ আশ্রমিকরা
প্রসঙ্গত, এই বাড়ি দীর্ঘদিন ধরেই ফাঁকা পড়েছিল বলে জানা গিয়েছে। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতি অমিতেন্দ্রনাথ ঠাকুর মাঝে মাঝে এই বাড়িতে আসতেন। কিছুদিন থাকার পর কলকাতায় ফিরে যেতেন। তবে শেষ কবে তিনি এসেছিলেন, তাও বলতে পারছেন না স্থানীয়রা। বাড়িটি দীর্ঘদিন তালাবন্ধ অবস্থায় পড়েছিল। মঙ্গলবার হঠাৎই বাড়ি ভাঙার খবর আসে। তা শুনেই ক্ষুব্ধ অনেকে।
শ্যাওলার মতো আস্তে আস্তে…
বিশ্বভারতীর পাঠভবনের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ তথা শান্তিনিকেতনের প্রবীণ আশ্রমিক সুব্রত সেন মজুমদার অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজরিত ‘আবাস’ বাড়িটির প্রতিবেশী। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়িতে তাঁর ছেলেদেরও বসবাস করতে দেখেছি। এই বাড়ি ভেঙে ফেলাটা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। বাড়ির কাঠামো ও গঠন অবন ঠাকুর, অলক ঠাকুরদের পরিকল্পিত ছিল। তাঁর নাম অনুসারেই বাড়ি রয়েছে বলেই এই পল্লী 'অবনপল্লী'। ভাবতেও পারছি না এত সুন্দর বাড়ি এভাবে ভেঙে ফেলা হবে । শ্যাওলার মতো আস্তে আস্তে একটা আদর্শের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে ধরছে রিসর্ট, হোটেল।’
জমি ব্যবসায়ীদের কাছে…
অন্যদিকে ঠাকুরবাড়ির সদস্য সুদৃপ্ত ঠাকুরের সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘শান্তিনিকেতনের বহু স্মৃতিই এইভাবে মুছে ফেলা হচ্ছে। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়িরও আজ কোনও মূল্য নেই । জমি ব্যবসায়ীদের কাছে এর চেয়ে জমির দাম অনেক বেশি! এর আগে ইন্দিরা দেবীর কোয়ার্টারও এইভাবে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। খুব খারাপ লাগছে।’