লোকসভা নির্বাচন মিটে গেলেও সন্দেশখালি ইস্যু এখনও জেগে রয়েছে। এখানে জোর করে জমি এবং ভেড়ি দখলের অভিযোগ উঠেছিল। তার জেরে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। আদালতের নির্দেশে এখনও তদন্ত করছে সিবিআই। আর এখানে তদন্ত চালাচ্ছে ইডিও। শেখ শাহজাহান এখন জেলে। আর এই মামলার তদন্তে নেমে মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানের ভাই, জামাই এবং তাঁর গাড়িচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান ইডির তদন্তকারীরা। কিন্তু এই তিনজনকে আগে দু’বার নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা এখনও পর্যন্ত একবারও ইডির ডাকে সাড়া দেননি। তাই এবার তৃতীয়বার তলব করা হল তাঁদের।
ইডি–সিবিআইয়ের সক্রিয়তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। তাই এবার রাজ্য পুলিশের সাহায্য নিয়ে এই তিনজনকে তৃতীয়বার নোটিশ পাঠাল ইডি। এই তলবেও যদি তাঁরা তদন্তে সহযোগিতা না করেন এবং হাজিরা না দেন তাহলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। ইডি সূত্রে খবর, সন্দেশখালির বাসিন্দাদের জমি–ভেড়ি দখল করে শাহজাহান তাঁর ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা অন্যত্র পাচার করেছেন। এই দুর্নীতিতে শাহজাহানের ভাই শেখ সিরাজউদ্দিন, জামাই রানাবাবু লস্কর এবং গাড়িরচালক মাহরুফ মীরের ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। তাই তাঁদের হাতে যে সব নথিপত্র আছে সেগুলি খতিয়ে দেখতেই এই তলব।
আরও পড়ুন: ‘জেলা সভাপতি তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন’, অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুললেন লকেট
এই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন ইডি অফিসাররা। তাই অন্যদের বয়ান যাচাই করে দেখার জন্য তিনজনের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন। ইডি সূত্রে খবর, এই তিনজনকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এখনও পর্যন্ত দু’বার তলব করা হয়েছে। তবে তাঁরা হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন। সম্প্রতি তাঁদের তলব করে আবার নোটিশ পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকানায়। যদিও তাঁদের বাড়ির সদস্যরা নোটিশ গ্রহণ করেনি। তারপর স্থানীয় ন্যাজাট থানার সাহায্যে ওই তিনজনের বাড়িতে তলবের চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই সপ্তাহের মধ্যে তিনজনকে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হতে হবে।
শেখ শাহজাহান জেলে থাকাকালীন লোকসভা নির্বাচন হয়। তারপরও দেখা যায়, তৃণমূল কংগ্রেস বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র জেতে। শেখ শাহজাহান তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আর তাঁর বিরুদ্ধেই রেশন দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। আর এই মামলায় তদন্ত করতে গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। তখন স্থানীয়দের একাংশ ইডির উপর হামলা করে বলে অভিযোগ ওঠে। প্রথমে ন্যাজাট থানা এই ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের কাছে। তারপরে শাহজাহান ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে জোর করে জমি দখল ও মহিলাদের উপর নির্যাতন সংক্রান্ত আরও অভিযোগ উঠে আসে। পরে স্টিং অপারেশনের দুটি ভিডিয়ো সামনে আসে। যা যাচাই করে দেখেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল।