শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে চলমান রাজনৈতিক বিতর্ক এড়িয়ে চলেছেন প্রথম থেকেই। তবে শুভেন্দুর পর তাঁর আর এক পুত্র সৌম্যেন্দুর গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর দিনেই ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ শিশির অধিকারী। অহরহ তাঁর পরিবারকে ‘মীরজাফর’, ‘বেইমান’ বলা হচ্ছে। আর তা বাড়িতে বসে হজম করতে হচ্ছিল তাঁকে। এবার কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী হুঁশিয়ারি দিয়ে বললেন, ‘ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে জবাব পাবে। জবাব দেবেন মেদিনীপুরের মানুষ। আমি যখন তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম, অবিভক্ত মেদিনীপুরে একটাও নির্বাচিত পদ ছিল না। আমি যোগ দেওয়ার পর দলে দলে সকলে যোগ দিল। আর আমি এখন হলাম মীরজাফর! আমি হলাম বেইমান।’
শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে তাঁর সম্পর্কে প্রশ্ন করায় শিশিরবাবু কৌশলে বলেছিলেন, ‘শুভেন্দু রাজ্যস্তরের নেতা। আমি দলের জেলা সভাপতি। শুভেন্দু সম্পর্কে আমি ব্যবস্থা নিতে পারি না।’ শুক্রবার কিন্তু তাঁর কথায় অনেক কিছুই জলের মতো স্পষ্ট হয়ে গেল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। কারণ গোটা পরিবারই পদ্ম শিবিরে নাম লেখানো শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে থেকেই রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম তাঁকে ‘মীরজাফর’ বলতে শুরু করেছিলেন। শুভেন্দু যোগ দেওয়ার পর তাঁকে একাধিকবার বলতে শোনা গিয়েছে, ‘অধিকারি পরিবারটাই মীরজাফর!’ শুক্রবার শিশিরবাবু হাসতে হাসতে বলেন, ‘মীরজাফর তো মুসলমান বলে জানতাম। তবে ববি (ফিরহাদ হাকিম) ভালো ছেলে। ও ভালো থাকুক। আমার পরিবারকে ববি গাল দিলে আমার কিছু যায় আসে না।’
উল্লেখ্য, শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেন গত ১৯ ডিসেম্বর। সপ্তাহদুয়েক বাদেই ফের বিজেপিতে কাঁথির অধিকারী বাড়ির আর এক সদস্য সৌম্যেন্দু। স্বাভাবিকভাবে অন্যদের নিয়েও সময়োপযোগী জল্পনা চলছেই। গত বুধবার শিশিরবাবুর সঙ্গে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ করেছেন বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাতো। তার পর এই ক্ষোভ প্রকাশ নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রীর সভাতেও যাননি। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘ওরা চাইছিল আমাকে দিয়ে ছেলের বিরুদ্ধে বলাতে। সেটা কি কখনও সম্ভব? আমি ছেলের বিরুদ্ধে যাব? ছেলে আমার পরিবারের বড় সম্পদ! আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে দল যা বলছে, তা ঠিক নয়। মমতা এখনও আমার নেত্রী। আমি তাঁর বিরুদ্ধে কোথাও একটিও কথা বলিনি। কিন্তু আমাদের পরিবারের অপমানের জবাব ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে দেবেন মেদিনীপুরের মানুষ।’