সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় 'বাবরি মসজিদ' তৈরির ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। দলেরই সতীর্থের এহেন মন্তব্যকে এবার 'লুজ টক' বলে উড়িয়ে দিলেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। বহরমপুরে বইমেলার উদ্বোধনে গিয়ে হুমায়ুনের 'বাবরি মসজিদ' নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন সিদ্দিকুল্লা। তবে বেলডাঙার বিধায়কের কথায় সেই অর্থে পাত্তা দেননি সিদ্দিকুল্লা। তিনি বলেন, 'এটা আমার বিষয় নয়। আমরা এরকম লুজ টক (আলটপকা মন্তব্য) করি না।' এদিকে বিজেপি নেতাদের ধর্মীয় গ্রন্থ পড়ার পরামর্শ দিলেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী। তাঁর কথায়, 'ওরা সংবিধান পড়েনি, তাই খারাপ কথা বলে। কাঁচা কাঁচা গালি দেয়। লেখাপড়া শিখলে দিত না। ওরা মহাভারত পড়েছে? রামায়ণ পড়েছে? গীতা পড়েছে? সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী পড়তে বলছে। পড়লে আর গালাগালি দেবে না, ভাল মানুষ হবে।' (আরও পড়ুন: আরজি কর মামলায় আইনজীবী বদল, এবার কাকে দায়িত্ব দিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা?)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশের চেষ্টা ৪ হিন্দুর, গ্রেফতার করল BGB
এদিকে বাংলাদেশ নিয়েও এদিন ফের প্রশ্নের মুখে পড়েন সিদ্দিকুল্লা। তবে আগের বারের মতো এবার তেমন কোনও বিস্ফোরক মন্তব্য তিনি করেননি। সোজা কথায় তিনি বলেন, 'এই বিষয়ে ভারত সরকারের যা মত, আমারও সেই একই মত। বাংলাদেশে যে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে দু’একজন খারাপ আছে, তাই বলে সবাই খারাপ নয়।' এদিকে ক'দিন আগেই এই সিদ্দিকুল্লা বলেছিলেন 'বাংলাদেশ নিয়ে বাড়াবাড়ি হচ্ছে'। পরে আবার বলেছিলেন, পরিস্থিতি ‘ভালো’ করতে বাংলাদেশে পাঠানো হোক তাঁদের। সিদ্দিকুল্লা বলেছিলেন, 'উভয় দেশের নাগরিক আদান-প্রদান, আলোচনা হোক। তা হলে পরিস্থিতিটা ভালো হবে। দরকারে আমাদের পাঠাক। ওঁদের বোঝাতে হবে, ভারতের মানুষ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেও নমাজ-সহ সব কিছু করতে পারে।' (আরও পড়ুন: সত্যি আলাদা হবে চট্টগ্রাম? আতঙ্কে ভারতের ইকোনমিক জোন বাতিলের দাবি বাংলাদেশে)
আরও পড়ুন: প্রেমিকাকে ধর্ষণ মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের চিকিৎসকের! পরে খুনের চেষ্টার অভিযোগ
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনার প্রভাব পড়েছ এপার বাংলার রাজনীতিতে। রাস্তায় নেমে বাংলাদেশের ইউনুস সরকার এবং এখানের মমতার সরকারকে তোপ দেগেছেন শুভেন্দু অধিকারী। এরই মাঝে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর কথা বলেছেন পড়শি দেশে। এই আবহে কয়েকদিন আগে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন। বাংলাদেশ নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী বলেছিলেন, 'বাড়াবাড়ি হচ্ছে। বাংলাদেশের হিন্দুদের বিজেপি নিয়ে আসছে। বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে বসে রয়েছেন হিন্দুরা। থানার বড় বাবু, বিচারপতি, এসপি, ডিএম, কত হিন্দু। এগুলো দেখা যায় না? মাদ্রাসার ছেলেরা মন্দির পাহারা দিয়ে পুজো করার সুযোগ করে দিয়েছে। এগুলো দেখতে পান না? পালটা হামলা যারা করছে, তারা অস্থির মস্তিষ্কের। বাংলাদেশে কোথায় কি ঘটেছে, প্রকৃতপক্ষ কতটা... অত্যাচার হলে নিশ্চিত ভাবে তার নিন্দা করতে হবে। তবে সেটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।' (আরও পড়ুন: হেনস্থার শিকার হয়েও দমছেন না চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী, এদিকে করলেন পুলিশের প্রশংসা)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আইন উপদেষ্টাই 'র এজেন্ট'? মুখ খুললেন ইউনুসের সরকারে থাকা ছাত্র নেতা
এরপর সিদ্দিকুল্লা আরও বলেছিলেন, 'এখানে যখন বাবরি মসজিদের বিষয়ে বাংলাদেশ মুখ খুলেছিল, তখন মোদীজি বলেছিলেন, এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ইউনুস সাহেবও ভালো উত্তর দিয়েছেন - এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সন্ন্যাসী যদি অপরাধ করে অপরাধী, ইমাম অপরাধ করলে অপরাধী। ভালো সন্ন্যাসী হলে কি অপরাধ করবে? সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ৪০ বছর ধরে কাজ করছে, সবার সামনে বলছি, ক'টা থানায় কেস দেখেছেন? অপরাধ হল অপরাধ।'