সাধারণ ফ্লু হয়েছিল সিকিমের এক তরুণীর। সেজন্য তাঁকে ভাড়াবাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল মালিকের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় এগিয়ে এলেন প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক বাইচুং ভুটিয়া। শিলিগুড়ির প্রধান নগরের ঘটনা।
বছর ১৮-র তরুণী আথেনা লিম্বু আদতে উত্তর সিকিমের দিকুচির বাসিন্দা। শিলিগুড়িতে একটি কল সেন্টারে যোগ দেওয়ার কথা ছিল আথেনার। কিন্তু লকডাউনের জেরে তা আটকে যায়। বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান নগর থানায় দায়ের করা অভিযোগে বাইচুং জানিয়েছেন, সাধারণ ফ্লু হওয়ার জন্য আথেনাকে গত ২ এপ্রিল বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন মালিক হীরেন দে। অথচ এক চিকিৎসক নিশ্চিত করেছিলেন, আথেনার সাধারণ ফ্লু হয়েছে।
অভিযোগে দায়েরের পর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাইচুং বলেন, 'জ্বর হতে আথেনাকে প্রধান নগরের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়। কোনও সাহায্য ছাড়াই তিন-চার ঘণ্টা বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। চিকিৎসক লিখিতভাবে জানিয়েছিল, আথেনার সাধারণ ফ্লু হয়েছে।' বাইচুং জানিয়েছেন, আথেনাকে ১৪ এপ্রিল ভাড়াবাড়িতে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সেদিনও তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ভাড়া মিটিয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিনি শর্মা এক সমাজকর্মীও জানান, চিকিৎসকের লিখিত বয়ান সত্ত্বেও লকডাউনের পর আথেনাকে চলে যেতে বলেন বাড়ির মালিক।
এরপর বন্ধুদের থেকে বাইচুংয়ের নম্বর পান আথেনা ও প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের সাহায্য চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আথেনা জানান, পরে একদিনের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতিও হয়েছিলেন।
যদিও বাড়ির মালিকের পালটা দাবি, আথেনা জোর করে বাড়ির মধ্যে ঢুকতে চাইছিলেন। তিনি বলেন, 'আমার বাড়িতে তিন মহিলা ভাড়া থাকছিলেন। লকডাউন ঘোষণার পর সবাই চলে গিয়েছিলেন। ১৫ দিন একজন (আথেনা) ফিরে এসেছিলেন। লকডাউন শেষের পর তাঁকে ফিরে যেতে বলেছিলাম আমি। তিনি ছেড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েকজনের সঙ্গে ফিরে এসে আমার জায়গায় জোরজবরদস্তি ঢুকতে চেয়েছিলেন। আমি পুলিশকে ডেকেছিলাম ও তিনি নিজের জিনিসপত্র নিয়ে চলে গিয়েছিলেন।'
বিষয়টি নিয়ে প্রধান নগর থানার আইসি বিশ্বজিৎ ঘোষাল বলেন, 'মহিলাকে বাড়িতে ঢোকার অনুমতি দিতে মালিককে নির্দেশ দিয়েছিলাম। আমরা বিষয়টি দেখছি।'
আথেনা জানান, বাইচুং ও বিনির সহায়তায় তিনি একটি হোটেলে ছিলেন। আপাতত মাটিগাড়ায় গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) পরিচালিত পাহাড়িয়া ভবনে রয়েছেন।
এদিকে, এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ বাইচুং। বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, 'সারা ভারতেই আমাদের লোকের বিরুদ্ধে এরকম ঘটনা ঘটছে, বিশেষত উত্তর-পূর্বের মানুষদের বিরুদ্ধে। বৈষম্যের প্রতি জিরো টলারেন্স হওয়া উচিত। এরকম ঘটনা বন্ধ করতে স্থানীয় প্রশাসনের সতর্ক থাকা ও উপুযক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।'