শিলিগুড়ির শিক্ষিকা শান্তা মণ্ডলের বদলির ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করেছে। এনিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশও দিয়েছে আদালত। কিন্তু কোথায় গেলেন সেই শান্তা মণ্ডল? তাঁর সঙ্গে কোনওভাবেই যোগাযোগ করতে পারছেন না সাংবাদিকরা। তাঁকে ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এর সঙ্গেই সামনে আসছে বিস্ফোরক তথ্য। শিলিগুড়ি সংলগ্ন মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির তৎকালীন বিধায়ক কংগ্রেসের শঙ্কর মালাকার ওই শিক্ষিকার বদলির জন্য সুপারিশ করে বিধায়ক প্যাডে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। আর তারপর সেই সুপারিশ অনুসারে সেই বদলি হয়েও যায়। এখানেই প্রশ্ন উঠছে তবে কি এই বদলির অনিয়মের অভিযোগের সঙ্গেও জড়িয়ে ছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়?
তবে শঙ্কর মালাকার সংবাদমাধ্যমের কাছে ওই চিঠির ব্যাপারে ইতিমধ্যেই স্বীকার করে নিয়েছেন। সূত্রের খবর, শান্তা একসময় ছাত্র পরিষদের নেত্রী ছিলেন। শিলিগুড়িতে যথেষ্ট প্রভাব ছিল তাঁর। তবে এই বদলির অনিয়মের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন জড়িত ছিল কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
নিয়ম ভেঙে বদলির অভিযোগ। তিন বছরে তিনবার বদলির অভিযোগ। ২০১৬ সালে শিলিগুড়ির শ্রীগুরু বিদ্যামন্দিরে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন শান্তা মণ্ডল। ২০১৯ সালে বীরপাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে যোগদান করেন তিনি। ১ বছর কাটার আগেই শিলিগুড়ির অমিয়গোপাল চৌধুরী স্মৃতি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে বদলির নির্দেশ আসে। সেই নির্দেশ ফিরিয়ে দেন ওই শিক্ষিকা। ফের বিশেষ কারণ দেখিয়ে বদলির আবেদন। সেই আবেদনকে মান্যতা দেয় শিক্ষা দফতর। ফের শ্রীগুরু বিদ্যামন্দিরে তাঁকে বদলি করে শিক্ষা দফতর। সেই বদলির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই স্কুলেরই সহকারী প্রধান শিক্ষক।
মামলাকারীর দাবি, শিক্ষা দফতরের বদলি আইন অনুসারে কোনও শিক্ষকের কোনও স্কুলে যোগদানের পর ৫ বছর পার না হলে তিনি বদলির জন্য আবেদনই করতে পারেন না। কিন্তু ৩ বছরের মধ্যে কী করে ৩ বার বদলি পেলেন শান্তাদেবী?
বৃহস্পতিবার এই মামলার রায়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ‘এই বদলির পিছনে প্রবল প্রভাবশালী কারও হাত দেখতে পাচ্ছি। বদলির তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হয়। শুক্রবার সকাল ১০.৩০ মিনিটের মধ্যে বীরপাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে যোগদান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। কিন্তু ওই শিক্ষিকা বীরপাড়ায় আসেননি বলে খবর। তবে শঙ্কর মালাকারের দাবি, বীরপাড়ায় ওই শিক্ষিকাকে বিরক্ত করা হচ্ছিল। সেকারণেই তিনি চিঠি পাঠিয়েছিলেন।