প্রায় ২০ দিনেরও বেশি সময় ধরে মহানন্দার জল শহরবাসীকে সরবরাহ করছে শিলিগুড়ি পুরসভা। কিন্তু, দেখা গিয়েছে সেই জলে ব্যাপক দূষণ রয়েছে। তারপর থেকেই মেয়র গৌতম দেব শহরবাসীকে পুরসভার সরবরাহ করার জল খেতে নিষেধ করেছেন। একই সঙ্গে শহরবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তবে এই ঘটনার পরেই পানীয় জলের জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে শিলিগুড়িতে। ফলস্বরূপ পানীয় জল সংগ্রহের জন্য লম্বা লাইন পড়ছে শিলিগুড়িবাসীর। এই সুযোগে জলের কালোবাজারির অভিযোগ উঠেছে। পুরসভার তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। এই অবস্থায় পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন শিলিগুড়ির মেয়র। তাঁর আশ্বাস আগামী ২ জুন বিকেলের পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন:‘বাড়িতে সরবরাহ করা জল ২ তারিখ পর্যন্ত পান করা যাবে না’, নিষেধ করলেন মেয়র
পরিশ্রুত পানীয় জলের দাবিতে শিলিগুড়ি পুরনিগমের সামনে বর্ষীয়ান বাম নেতা তথা প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখান বাম শিবিরের কর্মী ও সমর্থকরা। সেই সময় মেয়রের গাড়ি পৌঁছলে তা ঘিরে বিক্ষোভ করেন বিরোধীরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফলে মেয়র, ডেপুটি মেয়র ও মেয়র পারিষদদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বাকবিতন্ডা শুরু হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
গতকাল বুধবার পুরনিগমের সরবরাহ করা জল পান করতে নিষেধ করা হয়েছে। এই অবস্থায় পানীয় জলের পাউচ সরবরাহ করছে পুরসভা। আপাতত ২ জুন পর্যন্ত তিস্তার জল সরবরাহ না হওয়া পর্যন্ত পুরনিগমের জল পান করা যাবে না বলে ঘোষণা করেছেন মেয়র। এরপর থেকেই আজ বৃহস্পতিবার পানীয় জল কিনতে লম্বা লাইন পড়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায়। আবার কোথাও পুরসভার তরফে সরবরাহ করা পানীয় জলের পাউচ সংগ্রহ করতেও ভিড় হয় শহরবাসীর। পরিস্থিতি সামাল দিতে আপাতত পুরনিগমের তরফে ১ লক্ষ জলের পাউচ বিলি করা হচ্ছে প্রতিদিন। বোরো ভিত্তিক ২০ হাজার জলের পাউচ দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ওয়ার্ডগুলিতে জলের পাউচ বিলি করা শুরু হয়েছে।
গৌতম দেব জানান, পরিস্থিতির মোকাবেলার জন্য প্রতিদিন ১ লক্ষ পাউচ ২৬ টি গাড়ির মাধ্যমে বিলি করা হচ্ছে। তাছাড়া জলের যাতে কালোবাজারি না হয় তার জন্য বিক্রেতাদের ডেকে পুলিশ বৈঠক করেছে। তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পুরনো দরেই জল বিক্রি করতে হবে। মেয়রের আশ্বাস আগামী ২ জুন বিকেলের মধ্যে তিস্তার জল সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
কেন এই পরিস্থিতি?
গাজলডোবায় তিস্তার বাঁধ মেরামত চলছে। সেই কারণে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শিলিগুড়িতে তিস্তার জল সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে সমস্যার সমাধানে শহরবাসীকে মহানন্দার জল সরবরাহ করা হচ্ছে। মেয়র গৌতম দেব জানিয়েছেন, কলকাতায় জলের নমুনা পাঠানো হয়েছিল। রাজ্য জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতর থেকে আসা রিপোর্টে দেখা গিয়েছে সেই জলে অক্সিজেনের হার কম। তার পরেই জল পান করতে নিষেধ করা হয়। এই ঘটনায় মেয়রের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।