মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 'কিছুই জানেন না'। তবে শিলিগুড়িতে রামকৃষ্ণ মিশনের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বই। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শাসকদলই। এই সবের মাঝেই শিলিগুড়িতে রামকৃষ্ণ মিশনের জমি সিল করাকে নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে। অভিযোগ উঠছে, রামকৃষ্ণ মিশনের মালিকানাধীন 'সেবক হাউজ' বাড়ির বাইরে পুলিশ যে তালা লাগিয়ে সিল করেছে, তাতে 'ডিকে' ছাপ আছে। শিলিগুড়ির সবচেয়ে বড় নির্মাণসংস্থার সঙ্গে সেই সিলের সম্পর্ক আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। (আরও পড়ুন: 'জানি না' বলেও রামকৃষ্ণ মিশনে হামলাকে 'পারিবারিক বিষয়' আখ্যা মমতার!)
আরও পড়ুন: 'আসন সংখ্যা নেমে...', রামকৃষ্ণ মিশন ইস্যুতে মমতার 'পতন' দেখছেন দিলীপ
আরও পড়ুন: এখনও শেষ হয়নি ভোট, এর মাঝেই আরও একদফা ডিএ বাড়ল! নির্দেশ জারি অর্থ দফতরের
রিপোর্ট অনুযায়ী, বিবাদের নেপথ্যে থাকা জমিটি জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনকে দান করেছিলেন সুনীলকুমার রায় নামক এক ব্যক্তি। পরে ওই জমি নিয়ে বিবাদ দেখা দেয়। মালিকানা নিয়ে জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছিল। তবে আদালতের রায়ে সম্পত্তি এখন মিশনের মালিকানাধীন। তবে পুলিশ কেন সেই জমি সিল করল? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই নিয়ে দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক তথা আইনজীবী অত্রি শর্মা বলেন, 'চার মাইলে রামকৃষ্ণ মিশনের একটি কার্যালয় ছিল। সেখানে দুষ্কৃতী হামলা হয়েছে। সেখানকার কর্মীদের অন্যত্র নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। তদন্তের স্বার্থে হোক আর যে কারণেই হোক না কেন, আমরা জানতে পেরেছি যে, পুলিশ গিয়ে গেটে তালা ঝুলিয়েছে। যার ফলে সেখানকার সন্ন্যাসীরা সেখানে ঢুকতে পারছেন না। কিন্তু কার নির্দেশে সেই তালা দেওয়া হল? সেখানে আদালতের কোনও নোটিস নেই। তালা দেওয়ার ফলে দুষ্কৃতীরা যেটা চাইছিল, পুলিশের হাত দিয়ে সেই কাজটাই করানো হল?' (আরও পড়ুন: দীর্ঘ কয়েক বছরের মামলা শেষে মাথায় হাত সরকারি কর্মীদের, বড় রায় সুপ্রিম কোর্টের)
আরও পড়ুন: 'এটা চাকরিজীবীদের অধিকার', মামলাকারী সরকারি কর্মীদের মুখে হাসি ফোটাল আদালত
এদিকে এই গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন শিলিগুড়ির মেয়র তথা তৃণমূল নেতা গৌতম দেব। তাঁর কথায়, 'এই ধরনের ঘটনা একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না। মাফিয়া, গুন্ডা, সমাজবিরোধীদের রেয়াত করা হবে না।' প্রসঙ্গত, রবিবার রাতে শিলিগুড়ি লাগোয়া জলপাইগুড়ির শালুগাড়ায় রামকৃষ্ণ মিশনের ‘সেবক হাউজ’এ আক্রমণ চালায় প্রায় ৩৫ - ৪০ জন দুষ্কৃতী। তাদের অনেকের হাতেই ধারাল অস্ত্র ও বন্দুক ছিল। সন্ন্যাসীদের নিগ্রহ করে তারা। ওই ঘটনায় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করে রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষ। পালটা সন্ন্যাসীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে অভিযুক্ত প্রদীপ রায়। মঙ্গলবার জানা যায়, রামকৃষ্ণ মিশনের করা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রদীপ রায়ের বিরুদ্ধে সমস্ত জামিনযোগ্য ধারা প্রয়োগ করেছে পুলিশ। কিন্তু অভিযুক্ত প্রদীপ রায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মহারাজদের বিরুদ্ধে রুজু মামলায় প্রয়োগ করা হয়েছে একাধিক জামিনঅযোগ্য ধারা। এই আবহে হামলার তদন্ত ছেড়ে পুলিশ জমির মালিকানা নিয়ে তদন্ত করছে বলে জানা গিয়েছে। ভূমি রাজস্ব দফতরে নাকি এই নিয়ে খোঁজখবর চালিয়েছে পুলিশ। যা নিয়ে আরও রহস্য তৈরি হয়েছে।