পাসপোর্ট জাল করার জন্যই যাবতীয় শংসাপত্র তৈরি করে দিত তারা। এই অভিযোগে আজ, রবিবার দুই যুবককে গ্রেফতার করল বর্ধমান জেলা পুলিশ। এই দুই যুবক হুগলির সিঙ্গুরের বাসিন্দা। এখান থেকে বর্ধমান জেলা পুলিশ গ্রেফতার করল দু’জনকে। ধৃত দুই যুবকের নাম গণেশ চক্রবর্তী এবং অনির্বাণ সামন্ত। তারা পাসপোর্ট জাল করার কাজে সাহায্য করত এবং বিনিময়ে মোটা টাকা কামিয়ে নিত বলে অভিযোগ। এদের মধ্যে গণেশ চক্রবর্তীর বাড়ি সিঙ্গুরে এবং অনির্বাণ সামন্তের বাড়ি সিঙ্গুরের গণ্ডারপুকুর মাঘপাড়া এলাকায়। ধৃতদের পুলিশ হেফাজত চেয়ে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়েছে। মাঝরাতে হুগলির সিঙ্গুরের গান্ডারপুকুর এলাকা থেকে অনির্বাণ সামন্ত এবং সিঙ্গুরের নান্দা থেকে গণেশ চক্রবর্তী দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ।
এদিকে এই গ্রেফতার নিয়ে মুখ খুলেছে ওই দুই যুবকের পরিবারের সদস্যরা। ধৃত যুবকদের পরিবারের দাবি, তাদের ছেলেরা কোনও অসাধু চক্রের সঙ্গে জড়িত নয়। অনির্বাণের এলাকায় যথেষ্ট সুনাম আছে বলেও দাবি। সে গৃহশিক্ষকতার সঙ্গে সঙ্গে আলুর ব্যবসা করত। অনেককে প্যান কার্ড তৈরি করে দিত। আর গণেশের মায়ের দাবি, ছেলে এমন কোনও কাজ করতে বলে তিনি জানেনই না। গণেশের মা বলেন, ‘একটি বিমা সংস্থার এজেন্টের কাছে কাজ করত আমার ছেলে। তাছাড়া আর কিছু আমি জানি না। তবে এটা হলফ করে বলতে পারি আমার ছেলে কোনও খারাপ কাজ করতে পারে না।’
আরও পড়ুন: ‘প্রার্থনা করি তাঁর দীর্ঘ সুস্বাস্থ্য জীবনের’, মমতার জন্মদিনে শুভেচ্ছাবার্তা দিলেন মোদী
অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, পাসপোর্ট পেতে কমাস আগে আবেদন করেন বর্ধমান শহরের নতুনপল্লির বাসিন্দা রিঙ্কা দাস। পাসপোর্টের আবেদনের সময় তিনি জন্ম শংসাপত্র জমা দেন। কিন্তু আবেদনের নথিগুলি ভেরিফিকেশনের জন্য বর্ধমান জেলা গোয়েন্দা দফতরে পাঠানো হয়। গোয়েন্দা দফতর থেকে রিঙ্কাকে অফিসে ডেকে পাঠালে তিনি আসল নথিপত্র সঙ্গে নিয়ে গোয়েন্দা দফতরে যান। তাঁর জন্ম শংসাপত্র দেখে সন্দেহ হওয়ায় গোয়েন্দা দফতরের পক্ষ থেকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হয়। তখন সেটি জাল বলে হাসপাতালের সুপার জানিয়ে দেন। আর তখনই গোয়েন্দা দফতরের পক্ষ থেকে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এছাড়া ১৯ ডিসেম্বর বর্ধমান থেকে রিঙ্কাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, জাল ওই শংসাপত্রটি তাকে স্বরূপ জোগাড় করে দিয়েছে। পাসপোর্ট জালিয়াতি চক্রে অভিযুক্ত স্বরূপ রায়ের কাছ থেকে সিঙ্গুরের এই দুই যুবকের খোঁজ পায় পুলিশ। কেমন করে সিঙ্গুরের দুই যুবক পাসপোর্ট জালিয়াতি কাণ্ডে জড়িত তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে লালবাজারের গঠিত সিটের হাতে বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার আবদুল হাই এই কাজে জড়িত থাকায় গ্রেফতার হয়েছে।