মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর নন্দীগ্রামে গিয়ে মন্দিরে মন্দিরে পুজো দিচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই আচমকা তিনি পেছন থেকে ধাক্কা অনুভব করেন এবং পড়ে যান বলে অভিযোগ। এই ইস্যুতে এখন রাজ্য–রাজনীতি উত্তাল। একদিকে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠছে, অন্যদিকে সবটাই নাটক বলে মন্তব্য ধেয়ে আসছে বিরোধীদের পক্ষ থেকে। সুতরাং নির্বাচনের প্রাক–মুহূর্তে তেতে উঠেছে নজরকাড়া কেন্দ্র নন্দীগ্রাম। এই পরিস্থিতিতে এবার মুখ খুললেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ তথা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারী। আর তাতে আরও তপ্ত হয়ে উঠল জেলার সমীকরণ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঘাত পাওয়া নিয়ে শিশির অধিকারী বলেন, ‘রাস্তার ধারে খুঁটিতে লেগেই এই বিপত্তি। নন্দীগ্রামের মানুষ ষড়যন্ত্র জানেন না। নন্দীগ্রামের মানুষ আন্দোলন করতে জানেন। নিরাপত্তারক্ষীদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। দ্রুত সুস্থ হয়ে তিনি আবার নন্দীগ্রামে আসুন।’ আঘাত পাওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ ছিল, চার–পাঁচজন পেছন থেকে ধাক্কা দিয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে। এই ঘটনার পেছনে ষড়যন্ত্র আছে। কিন্তু তিনি কখনও বলেননি নন্দীগ্রামের মানুষ এই ষড়যন্ত্র করেছে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই–কে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কেউ ধাক্কা বা ঠেলাঠেলি করেনি। উনি হাতজোড় করে আসেন। গাড়ির দরজা খুলে ছিল। সেখানেই পা আটকে যায় এবং গাড়ির দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি গুরুতর চোট পান। কেউ ঠেলেওনি, মারেওনি। দরজার কাছে কেউ ছিল না। প্রত্যক্ষদর্শীরা এই বয়ান দিলেও মুখ্যমন্ত্রী পড়ে গেলেন কি করে তার ব্যাখ্যা কেউ দেননি। বিরোধীরা নানা কথা বললেও তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। যদিও এই বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারীর কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শিশিরবাবু ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থেকেও যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা বিরোধীদের আচরণের সমান বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে। যেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় থাকার কথা, সেখানে কোনও পুলিশ ছিল না বলে অভিযোগ। এই ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন। আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান ডিএম ও এসপি–ও। তাঁরা চলে যাওয়ার পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিরুলিয়া বাজার। তৃণমূল কংগ্রেস–বিজেপি দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বেঁধে যায়। রাস্তা অবরোধ করা হয়। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।