দিনের পর দিন চলেছে শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার। নিজের বাবার উপর ছেলে এই অত্যাচার করেছে বলে অভিযোগ। আর সেই নির্মম অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বৃদ্ধ বাবা আত্মঘাতী হলেন। এই ঘটনার পর গ্রেফতার হল ছেলে। উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরে এখন এই ঘটনাই চর্চিত হচ্ছে। প্রতিবেশীদের দাবি, বৃদ্ধের ছেলে–বৌমা ক্রমাগত তাঁকে অত্যাচার করত। তার সহ্য করতে না পেরেই এমন চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। আজ, বুধবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুর এলএমবি রোড এলাকায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত বৃদ্ধের নাম বীরেন দেব (৮৫)। আজ বুধবার সকালে ঘর থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ছেলে–বৌমার প্রবল অত্যাচারে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ওই বৃদ্ধ। এই ঘটনার পর ঘটনাস্থলে আসে খড়দা থানার পুলিশ। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে বৃদ্ধের ছেলে সজল দেবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছেলে–বৌমা শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত। বাড়িতে বৃদ্ধকেই থাকতে দেওয়া হচ্ছিল না। একাধিকবার তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে ছেলে–বৌমা। ওই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যা করেছেন বৃদ্ধ।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর সাধের বাউল অ্যাকাডেমি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে, কেন এমন ঘটনা ঘটেছে?
অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে ওই বৃদ্ধ আত্মহত্যা করেন। বুধবার সকালে খবর আসে খড়দা থানার পুলিশের কাছে। বিপত্নীক ওই বৃদ্ধকে ঠিক করে খেতে পর্যন্ত দেওয়া হতো না। দিনের পর দিন না খাইয়ে রাখা হতো। মঙ্গলবার রাতেও তাঁকে খেতে না দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল। তারপরই এমন চরম ঘটনা ঘটে। বৃদ্ধের ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কণিকা দত্ত নামে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘ওনাকে খেতেও দেওয়া হতো না। আমার মনে হচ্ছে, অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মানুষটা আত্মহত্যা করেছেন। ছেলে–বৌমার শাস্তির দাবি করছি। বৃদ্ধের কাছ থেকে বাড়ি লিখিয়ে নিয়েছিল ছেলে।’
এছাড়া বৃদ্ধের দেহ উদ্ধার হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি, শুধু ছেলেকে গ্রেফতার করলে চলবে না। বৃদ্ধের বৌমাকেও গ্রেফতার করতে হবে। কারণ সেও এই ঘটনায় সমান দোষী। যদিও এখনও পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। কিন্তু প্রতিবেশীরা ছেলে–বৌমা দু’জনেরই কঠোর শাস্তি চান। ছেলে–বৌমাকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। তাতে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এলাকায়।