সরস্বতী প্রতিমার ভাসানকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ড। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে ডিজে বন্ধ করতে গিয়ে মার খেল পুলিশ। মাথা ফাটল এক পুলিশকর্মীর। কার্যত রণক্ষেত্র চেহারা নেয় এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পরে এই ঘটনায় ৩০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে পান্ডুয়ার পাঁচঘড়া-তোরগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের নিয়াল ন’পাড়া এলাকায়।
আরও পড়ুন: বাবা মাকে অত্যাচার, বাঁচাতে গিয়ে পুলিশকে দা-এর কোপ ছেলের, প্রাণ বাঁচাল মোবাইল
জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে সরস্বতী প্রতিমার ভাসানের সময় এই ঘটনা ঘটে। তাতে মোট তিনজন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন এসআই, এক ভিলেজ পুলিশ ও একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টি শুরু করে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা। ইটের আঘাতে মাথা ফেটে যায় এসআই রাজদেব হাজরার। আর বাকি দুজন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে একাধিক থানা থেকে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। যার মধ্যে রয়েছে বলাগড়, পোলবা থানা এবং অন্যান্য থানার পুলিশ। শেষপর্যন্ত পুলিশ লাঠিচার্জ করে করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে।
জানা গিয়েছে, ন’পাড়ায় আটটি সরস্বতী পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। উদ্যোক্তারা ঠিক করেছিলেন, শনিবার একসঙ্গে এই প্রতিমাগুলির নিরঞ্জন করা হবে। সেই মতো সকাল থেকে তাঁরা প্রস্তুতি শুরু করেন। এরপর সকাল থেকে শুরু হয় ডিজে বক্সের তাণ্ডব।
যদিও উদ্যোক্তারা জানিয়েছিলেন যে ডিজে বাজানো হবে না। কিন্তু, তারপরেও ডিজে বাজানো হয়। এদিকে, আগামিকাল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। গ্রামে অনেক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রয়েছে। তাদের পড়াশোনার সমস্যা হচ্ছিল। সেই কারণে ডিজে বাজানোর প্রতিবাদ জানান স্থানীয়দের অনেকেই। তার ভিত্তিতে পুলিশের কাছে অভিযোগ যায়।
অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ডিজে বন্ধ করতে যায় গ্রামে। সেখানে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হতেই কার্যত মারমুখী হয়ে ওঠে অংশগ্রহণকারীরা। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টি শুরু করে। পরে বিশাল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী গিয়ে ধরপাকড় চালায়। সবমিলিয়ে পুলিশকে মারধরের অভিযোগে ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশি অভিযানে গোটা গ্রাম কার্যত পুরুষশূন্য হয়ে যায়।
এ বিষয়ে হুগলির (গ্রামীণ পুলিশ) ডিএসপি (ক্রাইম) অভিজিৎ সিনহা মহাপাত্র জানিয়েছেন, মোট ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি ডিজে বক্স বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই বিষয়ে শোভাযাত্রার আয়োজকদের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গ্রামের অনেকের বক্তব্য, এর পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। কারণ আগে থেকে ডিজে বাজানোর কোনও পরিকল্পনা ছিল না।