খারিফ মরসুমে সহায়ক মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে জেলায় জেলায় ধান কেনা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যজুড়ে এবার ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭০ লক্ষ টন। প্রতিবারই ধান বিক্রিকে কেন্দ্র করে ফড়েদের বাড়বাড়ন্ত সামনে আসে। তাই এবার ফড়েদের বাড়বাড়ন্ত রুখতে পদক্ষেপ নিয়েছে খাদ্য দফতর। কিন্তু, অভিযোগ উঠেছে চাষিদের ভুল বুঝিয়ে এমনকী তাদের কৃষকবন্ধু কার্ড ভাড়া নিয়ে ধান ক্রয় কেন্দ্রে গিয়ে ধান বিক্রি করছেন ফড়েরা। এছাড়াও, তারা চাষিদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে ধান কিনছেন এরকম অভিযোগ উঠেছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে।
আরও পড়ুন: ওজনে কারচুপি রুখতে ধানক্রয় কেন্দ্রে CCTV, বেশি বিক্রি করলেই ভাতা পাবেন চাষিরা
জানা যাচ্ছে, ফড়েরা চাষিদের কাছে গিয়ে বোঝাচ্ছে যে ধান ক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রি করলে অনেক হয়রানি হতে হয়। তাছাড়া টাকাও সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যায় না। কিন্তু, তাদের কাছে বিক্রি করলে কোনও ঝামেলা নেই। তাছাড়া নগদ টাকাও হাতেনাতে পেয়ে যাচ্ছেন। এইসব বুঝিয়েই ফড়েরা চাষিদের কাছ থেকে সহায়কমূল্যের থেকে অনেক কম দামে ধান কিনছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এবার সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির ক্ষেত্রে প্রতি কুইন্টালে ২৩২০ টাকা দাম ধার্য করা হয়েছে। তবে অভিযোগ, ফড়েরা চাষিদের কাছ থেকে ১৮০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা কুইন্টাল দরে ধান কিনছেন। শুধু তাই নয়, চাষিদের কাছ থেকে কৃষক বন্ধু কার্ড ভাড়া নিচ্ছেন। আর সেই কার্ড দেখিয়ে ধান ক্রয় কেন্দ্রে গিয়ে সহায়ক মূল্যে সেই ধান বিক্রি করছেন। অর্থাৎ কুইন্টাল প্রতি ফড়েরা ৫০০ থেকে ৩৫০ টাকা মতো লাভ করছেন। এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন মাড়াইকুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য তথা রায়গঞ্জের ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সহ সভাপতি আলতাব হোসেন। আরও অভিযোগ, কৃষক বন্ধু কার্ডের পরিবর্তে ফড়েরা চাষিদের কিছু টাকা ধরিয়ে দিচ্ছেন।
আলতাব হোসেনের এমন অভিযোগ মেনে নিয়েছেন চাষিরাও। বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, কৃষকরা সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করলে অনেক দেরিতে তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে। সে ক্ষেত্রে এক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই ফড়েদের কাছে কম দামে ধান বিক্রি করছেন চাষিরা। যদিও এনিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলেছে স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাদের বক্তব্য তৃণমূল লুট চালাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কৃষকরা যাতে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারেন তার জন্য এবার এই জেলায় ২৩টি সহায়ক ধান ক্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এবার এই জেলায় প্রায় ২ লক্ষ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। ফড়েদের বাড়বাড়ন্ত প্রসঙ্গে অবশ্য জেলা খাদ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, একজন কৃষক ৯০ কুইন্টাল ধান বিক্রি করতে পারবেন। ধান বিক্রি করলে তিন দিনের মধ্যে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাচ্ছে। এরজন্য প্রচার চালানো হচ্ছে।