বাবা শয্যাশায়ী। মা কোনওভাবে বিড়ি বেঁধে সংসার চালান। অভাবের এই সংসারে পড়াশোনা করে উচ্চমাধ্যমিকে যুগ্ম পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে বাঁকুড়ার সোমনাথ পাল। কিন্তু, পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে সোমনাথ এবং তার পরিবার বেজায় খুশি হলেও এখন উচ্চশিক্ষা নিয়ে তারা চিন্তিত। কারণ অভাবের সংসারে ছেলেকে কীভাবে কলেজে ভর্তি করাবেন সেটাই এখন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সোমনাথের পরিবারের কাছে।
এবারের উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০০ এর মধ্যে ৪৯৪ নম্বর পেয়েছে সোমনাথ পাল। বাঁকুড়ার গোয়েঙ্কা হাইস্কুলের ছাত্র। বই কেনার টাকা ছিল না সোমনাথের কাছে। রামকৃষ্ণ মিশন থেকে বই এনে পড়াশোনা করেছে। সোমনাথ এবার ভালোই পরীক্ষা দিয়েছিল। তাই ফল ভালো হবে বলেই আশা করেছিল। কিন্তু, সে যে প্রথম ১০ এর মধ্যে থাকবে তা ভাবতে পারিনি সোমনাথ এবং তার পরিবার। এখন ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষক হতে চায় সোমনাথ। তার কথায়, ‘শিক্ষকই হল সমাজের মেরুদন্ড। তাই ভূগোল নিয়ে পড়ে আমি শিক্ষকতা করতে চাই।’
সোমনাথের বাবা নন্দ পাল আগে সবজি বিক্রি করতেন। কিন্তু, একটি দুর্ঘটনায় পর থেকে তিনি শয্যাশায়ী। তার পর থেকে সংসারের হাল ধরেন তার মা। সোমনাথের পরিবারে রয়েছে বাবা-মা এবং তার এক বোন। এরকম দারিদ্রতার মধ্যেও সোমনাথ যেভাবে ভালো নম্বর পেয়েছে তাতে খুশি পাড়া-প্রতিবেশীরা। অভাবের সংসারে বাড়িতে মিষ্টি নেই। তাই ফল পাওয়ার পর স্টিলের গ্লাসে করেই জল খাইয়ে সোমনাথকে আশীর্বাদ করেন তার মা মুক্তা পাল।
সোমনাথ এখন ভূগোল নিয়ে পড়তে চাইলেও তার কাছে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক সমস্যা। ফলে সাহায্যের দিকে তাকিয়ে রয়েছে সোমনাথের মা। এখন জেলা প্রশাসন এনিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় কিনা সেটাই দেখার।