শূন্যতা কাটেনি। তারপরও দলের অন্দরে গৃহযুদ্ধ ঠেকানো গেল না। বরং সিপিএমের অন্দরে বিদ্রোহ পৌঁছল চরম পর্যায়ে। সিপিএমে স্বৈরতন্ত্র চলছে, কোষাগারের টাকাও তছরুপ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। আর এই অভিযোগ তুলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা কমিটি থেকে নাম তুলে নিল দলেরই এক তৃতীয়াংশ কমরেড। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ‘বিদ্রোহ’ কার্যত নজিরবিহীন বলে মনে করছেন দলেরই প্রবীণ নেতৃত্বের একাংশ। সংগঠন গড়ে তোলা তো দূরের কথা, বরং সংগঠন ভেঙে পড়ছে তাসের ঘরের মতো।
এদিকে জেলা কমিটি থেকে বাদ পড়লেন একদা পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ খোকন ঘোষদস্তিদার। এমনকী তাঁর সঙ্গে বাদ গেলেন আরও তিনজন কমরেড। ওই বাদ পড়া তিনজন হলেন— অনির্বাণ ভট্টাচার্য, রশিদ গাজি, অপূর্ব প্রামাণিক বলে সূত্রের খবর। এই দেখে প্রতিবাদে সরব হন জেলা কমিটির অন্যান্য কমরেডরা। আর তারপরই গর্জে উঠে পদত্যাগ করেছেন আরও ১৮ জন। এখন আমতলার সোনাঝুরিতে সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২৬তম জেলা সম্মেলন চলছে। আজ শনিবার জেলা কমিটিতে পেশ হওয়া প্রস্তাবিত সদস্য প্যানেল থেকে এক তৃতীয়াংশ সদস্য বিদ্রোহ করে তাঁদের নাম প্রত্যাহার করে নেন বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ‘আর একটা সেটব্যাক হল পশ্চিমবঙ্গের’, জলজীবন মিশন নিয়ে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ সুকান্তর
অন্যদিকে এই ঘটনায় বেশ চাপে পড়ে গিয়েছেন সিপিএমের শীর্ষ নেতারা। বিদায়ী এই কমিটির সম্পাদক রতন বাগচী নতুন কমিটির প্রস্তাব করতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সিপিএম সূত্রে খবর, বিদায়ী সম্পাদক ৬৫ জনের নাম প্রস্তাব করেছেন। তাঁদের মধ্যে ১৮ জন নাম প্রত্যাহার করে নেন। ওই তালিকায় নাম রয়েছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নেত্রী চন্দনা ঘোষদস্তিদার। সুজন চক্রবর্তীর ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত রাহুল ঘোষও নাম তুলে নিয়েছেন। যা নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। পদত্যাগ করেন পদ্ম দাশগুপ্ত। সম্মেলন থেকে নিজেকে বিরত রাখলেন এসএফআই থেকে উঠে আসা তরুণ মুখ প্রতিকূর রহমান।
এছাড়া বিদ্রোহী কমরেডদের অভিযোগ, বহু নেতাই দলের গঠনতন্ত্র মেনে চলছেন না। নিজেদের মতো করে দল চালাচ্ছেন। দলীয় কোষাগারের টাকা লুঠ করে নিজেদের আখের গোছাচ্ছেন। আত্মসাতের মনোভাব নিয়ে দল চালাচ্ছেন অনেকে। প্রয়োজনে পার্টি কর্মীদের পাশে দলীয় নেতাদের দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। এই আবহে পদত্যাগ করেছেন সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তীও। গোটা ঘটনাকে নিয়েই এখন তুমুল চর্চা শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর।