এবার বর্ষা দেরিতে আসায় তা অনেকদিন ধরেই চলছে। আর তার জেরে নদীর জল ফুলে উঠে বাঁধ ভেঙে দিচ্ছে। অনেক জায়গায় ধস নামছে। আর তাতেই বিপাকে পড়ছেন গ্রামবাংলার মানুষজন। এবার হঠাৎ নদীবাঁধে ধস নামল দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার পাখিরালয় এলাকায়। এই ঘটনায় আতঙ্কে পড়ে যান গ্রামবাসীরা। গতকাল শুক্রবার বেশি রাতে পাখিরালয়ে প্রায় ১০০ ফুট এলাকা জুড়ে গোমর নদীর বাঁধ ধসে যায়। এমন পরিস্থিতিতে খবর যায় সেচ দফতরে। এই খবর পেয়ে ছুটে আসেন সেচ দফতরের কর্মীরা। রাতভর চলে মেরামতির কাজ। আর তা না হলে বড় বিপদের মুখে পড়তে হতো গ্রামের মানুষজনকে।
এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গোসাবার পাখিরালয় এলাকায় নদীবাঁধে ধস নামায় ভাবিয়ে তুলেছে এখানকার মানুষজনকে। কারণ এখান থেকে বড় বিপদ আসার সম্ভাবনা আছে কিনা সেটাই এখন চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ধসের ফলে নদীর জল লোকালয়ে চলে এলে চাষের জমিতে ঢুকে পড়ত। সেটা এখনও হয়নি। ব্লক প্রশাসনকে দ্রুত খবর দেওয়ার ফলে কাজ হয়। সেচ দফতরের কর্মীরা রাতেই ধসের জায়গায় এসে বাঁধ মেরামতির কাজ করেন। শনিবার সকালেও তা চলেছে। বাঁধ মেরামতি করার পর এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। তবে স্থানীয় গ্রামবাসীরা দাবি তুলছেন, শক্তপোক্ত বাঁধ গড়া হোক। নয়তো বারবারই এই বাঁধ ভেঙে সমস্যা হবে।
আরও পড়ুন: ‘এভাবে চার্জশিট পেশের পর কাউকে তলব করা যায়?’ কয়লা পাচার মামলায় ভর্ৎসনা সিবিআইকে
উত্তরবঙ্গের জেলা মালদায় এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। কিন্তু এবার তা দেখা গিয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। অগস্ট মাসের শেষে কাকদ্বীপ মহকুমার নানা বাঁধে ধস নামে। তার ফলে সাধারণ মানুষের জনজীবনে প্রভাব পড়ে। পূর্ণিমার কোটালে নদীর জলস্তর বেড়ে যায়। তার জেরে সমূহ বিপত্তি দেখা দেয়। কাকদ্বীপ মহকুমার অন্তর্গত নামখানা, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা এবং সাগর ব্লকের গঙ্গাসাগর সমুদ্রতট, মৌসুনি দ্বীপ, নারায়ণগঞ্জ ও গোবর্ধনপুর এলাকায় নদী বাঁধে ধস নামে। স্থানীয় সূত্রে খবর, পরিস্থিতি এমন জটিল আকার ধারণ করে যাতে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে প্রশাসন।
সম্প্রতি কপিলমুনির আশ্রমের কাছে ধস নামার খবর মেলে। সেখানে তড়িঘড়ি কাজ শুরু হয়। এই ঘটনার পর থেকেই দেখা যাচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকায় এই ধসের ঘটনা ঘটেই চলেছে। নামখানা ব্লকের নারায়ণগঞ্জে দেখা যায়, প্রায় ১২০০ মিটার মাটির বাঁধ ধস নেমে মুড়িগঙ্গা নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০২৩ সালে এই বাঁধটি প্রায় ছয় কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়েছিল। কয়েক মাসের মধ্যেই বাঁধের এই দশা হবে তা কেউ ভাবতে পারেনি। আর তাই এবার আবার বিপত্তি দেখা দেয় গোসাবায়।