এবার মধ্যযুগীয় বর্বরতার চরম সীমা পার করতে দেখা গেল অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীর স্ত্রীকে। স্বামীর পেনশন–সহ ব্যাঙ্কের টাকা নিজের নামে লিখে নিয়ে মৃতপ্রায় স্বামীকে রাস্তার ধারে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল স্ত্রীর বিরুদ্ধে। আর এই অভিযোগ করলেন গৃহবধূর ছোট মেয়ে এবং তার জামাই। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে গেল জেলায়। এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। যা নিয়ে বর্ষশেষের দুপুরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার রায়দিঘি থানার শ্রীফলতলা এলাকায়। স্থানীয় সুত্রে খবর, মথুরাপুর ২ নম্বর ব্লকের রায়দিঘি এলাকার ৬৪ বছরের মৃতপ্রায় বৃদ্ধ সুকান্ত হালদার সেচ দফতরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন। গত চার বছর আগে চাকরি থেকে অবসরগ্রহণ করেন সুকান্তবাবু। অবসরকালীন টাকা, স্ত্রী এবং তিন মেয়েকে ভাগ করে দেন তিনি। পুত্রসন্তান না থাকায় ছোট মেয়ে চম্পা গায়েনের কাছে রায়দিঘি শ্রীফলতলায় থাকতেন সুকান্তবাবু। আর স্ত্রী সবিতা হালদার ডায়মন্ড হারবারে বড় মেয়ে বিশাখা হালদারের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। মাসের শেষে পেনশনের এনে ছোট মেয়ের হাতে টাকা তুলে দিতেন সুকান্তবাবু। সেই টাকা নিয়ে চলে যেত সবিতা হালদার বলে অভিযোগ ছোট মেয়ে এবং জামাইয়ের।
অন্যদিকে ২০২২ সালে ছোট মেয়ের বাড়িতে এসে স্বামীকে নিয়ে চলে যান সবিতা বড় মেয়ের বাড়িতে। সেখানে সম্পূর্ণ পেনশন নিজে তুলবেন বলে স্বামীর কাছ থেকে লিখিয়ে নেন স্ত্রী সবিতা বলে অভিযোগ ছোট মেয়ের। সেই মতো এটিএম কার্ড ব্যবহার করে টাকা তুলতে থাকেন সবিতা। গত কয়েকদিন আগে রাতের অন্ধকারে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে ছোট মেয়ের বাড়ির সামনে রাস্তায় সুকান্ত হালদারকে ফেলে রেখে চলে যায় স্ত্রী সবিতা বলে অভিযোগ। সকালে উঠে তা দেখতে পেয়ে হইহই কাণ্ড বেঁধে যায়। আর যোগাযোগ করা যায় না সুকান্তবাবুর স্ত্রী সবিতার সঙ্গে।
আরও পড়ুন: ‘ঘর ঘর যাত্রা’ কর্মসূচি নিচ্ছে বিজেপি, রামমন্দির ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে জনসংযোগ
তখন ছোট মেয়ে এবং জামাই বৃদ্ধকে ওই অবস্থায় পেয়ে রায়দিঘি হাসপাতালে ভর্তি করেন। এখন বৃদ্ধ সুকান্তবাবু হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় রয়েছেন। অথচ প্রতি মাসে ব্যাঙ্কের টাকা তুলে নিচ্ছেন স্ত্রী সবিতা বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় ছোট মেয়ের আবেদন মা বাবার কাছে আসুক অথবা বাবার পেনশনের টাকা তাঁদেরকে দিলে তাঁরা বাবার ভালো চিকিৎসা করাতে পারে। আর মা সবিতা হালদার দাবি করেন, অসুস্থ স্বামীকে তার ছোট মেয়ে এবং জামাইকে জানিয়েই ওখানে রেখে এসেছেন। পেনশনের টাকার জন্য এই মিথ্যা কথা বলছে তার ছোট মেয়ে এবং জামাই। তবে অসুস্থ স্বামীকে রেখে আসার পর কেন দেখতে যাননি? এই প্রশ্নের উত্তরে নির্বিকার স্ত্রী।