হোটেলের আঁকাবাঁকা সিঁড়ি বেয়ে উঠে গিয়েছে ভিতরে। যেখানে একের পর এক ঘর রয়েছে। ভিতর থেকে বন্ধ। বাইরে থেকে টোকা মারলে দরজা খুলছে একজন যুবতী অথবা গৃহবধূ। সেখানে ঢুকে পড়ছে ক্রেতা। তার আগে হয়ে যাচ্ছে টাকার লেনদেন। আলো–আঁধারির আবহে তৈরি ঘরের মধ্যে চলছে উদ্দাম যৌনতা। এভাবেই দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারীতে দেহব্যবসা চালাচ্ছিল এক হোটেল মালিক বলে অভিযোগ। আর এই অভিযোগে গ্রেফতার হলেন এক হোটেল মালিক। চাঁদমুখ এলাকায় ওই হোটেল মালিক জয়ন্ত মণ্ডলকে বমাল ধরে ফেলল পুলিশ। আর তখন সুযোগ বুঝে স্থানীয় বাসিন্দারা কয়েক ঘা বসিয়ে দিলেন।
জনবহুল এলাকায় যেখানে গৃহস্থদের বসবাস সেখানে এভাবে দেহব্যবসা চালাচ্ছিল ওই হোটেল মালিক বলে অভিযোগ। ওই হোটেলের সামনে ইদানিং বেশ কয়েকজন যুবতী এবং গৃহবধূরা ঘোরাঘুরি করছিল। এটা দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। এরপর ওই হোটেলের উপর নজর রেখে এবং একজনকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে গোটা বিষয়টি জানতে পারেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপরই হোটেলের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এখানে যুবতী থেকে বধূরা সন্ধ্যা নামতেই ভিড় করে এবং বেশি রাতে বা সকালে সেখান থেকে চলে যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। ওই সময় হোটেলে কী চলে? এই প্রশ্নের উত্তর স্থানীয়দের দিতে চাননি মালিক। তাই গ্রামবাসীরা হোটেল ঘিরে ফেলেন। আর উত্তেজনা তৈরি হয়।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ কলকাতায় বিজেপির অনুষ্ঠানে তাণ্ডব, চেয়ার ছোঁড়া থেকে কালি লাগানোয় দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে
অনেক বাধা দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের আটকাতে পারেনি হোটেল কর্তৃপক্ষ এবং দলবল। তখন হোটেলের ভিতরে ঢুকে পড়ে গ্রামবাসীদের বড় টিম। কয়েকজন বধূকে পুরুষদের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান তাঁরা। এই অবস্থায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন সকলে। জয়ন্ত মণ্ডলকে আটকে রেখে হোটেলে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। খবর পৌঁছে যায় পুলিশের কাছে। বংশীহারী থানার পুলিশ এসে অভিযুক্ত হোটেল মালিককে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। আর হোটেলটি সিল করে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বুনিয়াদপুরে জোর চর্চা শুরু হয়ে যায়। এলাকার পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় এবং মেয়েদের জীবনে যেন খারাপ প্রভাব নেমে না আসে তাই এই দেহব্যবসা বন্ধ করা হয়েছে। এই বিষয়ে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়ে একজনকে ধরা হয়েছে। অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হয়েছে। এবার শহরের অন্য হোটেলগুলিতেও নজরদারি করা হবে। দোষীরা কেউই ছাড় পাবে না।’ স্থানীয় বাসিন্দা হুসেন আলি, আমিনুল হক এবং সোনা কাদির মিঁয়ার বক্তব্য, ‘এটা দিনের পর দিন চলছিল। আমরা আগেই সন্দেহ করেছিলাম। এখন পুলিশ পদক্ষেপ করতেই ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ল।’