বর্ষা শুরু হতে না হতে এ বছর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ডেঙ্গি। বিশেষ করে পুর এলাকাগুলিতেই ডেঙ্গি আক্রান্তের হার বেশি। এই অবস্থায় ডেঙ্গি রুখতে সমস্ত পুরসভাকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। সেইমতোই পুরসভার তরফে ডেঙ্গির লার্ভা নিধনের পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং কেউ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন কিনা অথবা বাড়িতে জল জমে থাকছে কিনা সেই বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার ওপর জোর দিয়েছে পুরসভাগুলি। দক্ষিণ দমদম পুরসভা ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে সার্ভে করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই মতোই সার্ভের জন্য টিম তৈরি করে পুরসভা। কিন্তু, সেই সার্ভে টিমের বিরুদ্ধে ডেঙ্গির রিপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ উঠল।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু মশার লার্ভা রোধে পাকা পেঁপের বীজ, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাট আবিষ্কার
অভিযোগ উঠেছে, এই সার্ভে টিম বাড়ি বাড়ি না ঘুরে নাকি ঘরে বসেই মনগড়া রিপোর্ট তৈরি করছে। আর সেই রিপোর্ট জমা দিচ্ছে পুরসভায়। জানা যাচ্ছে, সার্ভে টিমের রিপোর্ট পাওয়ার পর পুরসভার আধিকারিকরা আলাদাভাবে সার্ভে করেছিলেন। তাতেই এই বিরাট গাফিলতির অভিযোগ সামনে আসে।
সাধারণত এই টিমের কাজ হল কোথাও আবর্জনা বা জল জমে রয়েছে কিনা, কেউ ডেঙ্গি আক্রান্ত কিনা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সে বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া। এরপর টিমের সদস্যরা বিষয়টি সুপারভাইজারদের জানান। পরে সুপারভাইজাররা সেই তথ্য লিখিতভাবে পুরসভাকে জানান। জল জমা থাকলে তা পরিষ্কার করা হয় অথবা আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়।
উল্লেখ্য, এই টিমে সদস্যদের সুডা দৈনিক ১৭৫ টাকা ভাতা দিয়ে থাকে। পাশাপাশি পুরসভার তরফে দৈনিক অতিরিক্ত ১০০ টাকা করে দেওয়া হয়। এই টিমের কাজ করার কথা মাসে ১২ দিন। কিন্তু, তার পরিবর্তে তাদের ২৬ দিনের কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে অতিরিক্ত ১৪ দিনের ভাতা টাকা বহন করতে হচ্ছে পুরসভাকে।
জানা যাচ্ছে, এই পুরসভায় এরকম ১০ টি সার্ভে টিম তৈরি করা হয়। কিন্তু, অভিযোগ উঠছে যে এই টিম ভুয়ো রিপোর্ট দিচ্ছে। এমন অভিযোগ সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা। এর পরেই সার্ভে টিমকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে পুরসভা। সেক্ষেত্রে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে পুরসভার তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, পুরসভার ৩৫ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫ এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডে কোনও বাড়িই ভিজিটি করেনি এই টিম। পুরসভার আধিকারিকরা জানান, অন্যান্য ওয়ার্ড মিলিয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়িতে যায়নি এই সার্ভে টিম। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ দমদম হল ডেঙ্গি প্রবণ। তাই এখানে কোনওভাবেই এই কাজে গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না বলে পুরসভার তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।