গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে তাঁর পুরনো কেন্দ্র বীজপুর থেকে পরাজিত হন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের পুত্র শুভ্রাংশু রায়। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর এতদিন চুপ থাকলেও শনিবার শুভ্রাংশুর একটি ফেসবুক পোস্ট সকলেরই নজর কেড়েছে। সেখানে আত্মসমালোচনার কথা বলেছেন এই যুব নেতা। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া একাধিক নেতা–নেত্রীরা যখন প্রকাশ্যে হোক বা ঘনিষ্ঠ মহলে বেসুরো গাইতে শুরু করেছেন, তখন শুভ্রাংশুর এই পোস্ট অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
কী লিখেছেন শুভ্রাংশু? বীজপুরের এই প্রাক্তন বিধায়ক ফেসবুকে লিখেছেন,‘জনগনের সমর্থন নিয়ে আসা সরকারের সমালোচনা করার আগে আত্মসমালোচনা করা বেশি প্রয়োজন।’ শুভ্রাংশুর বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু বিজেপির হারের পিছনে কী কী কারণ লুকিয়ে রয়েছে, দলের অভ্যন্তরে তাঁর বিশ্লেষণ চাইছেন।পাশাপাশি জনগণের সমর্থনে জিতে আসা তৃণমূল সরকারের প্রতি যে তাঁর শ্রদ্ধা রয়েছে, তাও শুভ্রাংশুর ফেসবুক বার্তাতেই স্পষ্ট।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, নির্বাচনের আগে থেকেই বিজেপির মধ্যে আদি ও নব্য বিজেপির মধ্যে লড়াই অনেকসময়ই প্রকাশ্যে চলে এসেছে। সেই আদি ও নব্য বিজেপির মধ্যে লড়াই যে প্রার্থী বাছাইয়ের মধ্যে পড়েনি, সেকথা হলফ করে কেউ বলতে পারে না।এরইমধ্যে বিধানসভা ভোটে শোচনীয় হারের পর বিজেপি যে ৭৭ জন বিধায়ক জিতেছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই তৃণমূলের সঙ্গে ফের যোগাযোগ শুরু করেছেন বলে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের এই ফেসবুক বার্তা রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া সোনালি গুহের মুখেও বিজেপির প্রতি সমালোচনার সুর স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিজেপিতে যাওয়া যে তাঁর ভুল ছিল, সেকথা প্রকাশ্যেই বলতে শোনা গিয়েছে সোনালিদেবীকে। সেইসঙ্গে সোনালিদেবী এই কথাও তাঁর দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেই তাঁর বিজেপিতে যাওয়া। কিন্তু বিজেপিতে গিয়েও যখন তিনি দেখলেন, তিনি কাজ করতে পারছেন না, তখন তিনি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যাওয়া সোনালিদেবীর মুখে যখন এহেন সমালোচনার সুর, তখন মুকুল ঘনিষ্ট আরেক বিজেপি নেতা সব্যসাচী দত্ত নাকি এখন থেকেই বিজেপির সঙ্গে নিজের দুরত্ব বাড়াতে শুরু করেছেন বলে রাজনৈতিক মহলের খবর।জানা গিয়েছে, ইদানিং নাকি তিনি বিজেপি নেতা—কর্মীদের ফোন বিশেষ ধরছেন না।তার থেকে বড় কথা, সব্যসাচী দত্তকেও এখন বলতে শোনা গিয়েছে, তাঁর সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক কিন্তু খারাপ হয়নি। তবে এখনও পর্যন্ত অবশ্য বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের পক্ষ থেকে অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।