হেরেও যেন হার না মানার মনোভাব রয়েছে তাঁর মধ্যে। গড় এখন আর তাঁর নেই। সেই গড় এখন তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। বলা যেতে পারে, হাতে আর মানুষ হাত মেলায়নি। বরং সে মাটিতে এখন ঘাসফুল ফুটেছে। সদ্য নয়াদিল্লি গিয়ে কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে দেখা করে এসেছেন তিনি। তারপর থেকেই ঘাঁটি গেড়ে বসেছেন বহরমপুরে। হ্যাঁ, তিনি অধীররঞ্জন চৌধুরী। যিনি লোকসভা নির্বাচনে হেরে গিয়েছেন ইউসুফ পাঠানের কাছ থেকে। তবে এখনও বহরমপুরে তাঁর উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন অধীর চৌধুরী। সেই একই মেজাজে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এখনও তিনিই আছেন। তবে সেখানে পরিবর্তন আসতে চলেছে বলে সূত্রের খবর।
বামেদের সঙ্গে জোট করে ধরাশায়ী হয়েছে কংগ্রেস। নিজেও হেরেছেন অধীর চৌধুরী বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে। যেটাকে তাঁর ‘গড়’ বলা হয়। সেখানে হেরে গিয়ে এখন অধীর ছটফট করছেন। তাঁর পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপ কী হবে সেদিকেও তাকিয়ে রয়েছে বহরমপুরের কংগ্রেস কর্মীরা। তবে রাজনীতির ময়দানে টিকে থাকতেই নানা ধরনের আন্দোলন করে চলেছেন অধীর চৌধুরী। এখন বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ পানীয় জলের সংকট নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন। জেলাশাসককে এই মর্মে চিঠি পর্যন্ত দিয়েছেন অধীর।
আরও পড়ুন: ‘রাজ্যপালের এখানে থাকার প্রয়োজন কী?’ প্রশ্ন তুলে দিলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ
এদিকে লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, তৃণমূল যদি তাঁকে হারাতে পারে তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। মাঠে গিয়ে বাদাম বেচবেন। কিন্তু হেরে গিয়ে কথা রাখেননি অধীর। এই বিষয়ে বহরমপুরের পুরপ্রধান তৃণমূল কংগ্রেসের নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘নির্বাচনে হেরে গিয়ে অধীর চৌধুরী বহরমপুরবাসীর কাছে প্রাসঙ্গিক থাকতে চাইছেন। নিজেকে ‘বহরমপুরের মসিহা’ প্রমাণ করতে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছেন। ভাগীরথীর জল ঘোলা থাকায় এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে জল সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। সে কথা আমরা পুরসভা থেকে প্রচারও করেছি। সেটা নিয়েও তিনি রাজনীতি করছেন।’
এবার সিপিএম বাংলায় একটি আসন পায়নি। কংগ্রেস ৪২টি আসনের মধ্যে একটি জিততে পেরেছেন। বিজেপি ১২টি আসনে থেমে গিয়েছে। আর তৃণমূল কংগ্রেস ২৯টি আসন পেয়েছে। আবার অধীর চৌধুরী নিজের গড়েই হেরেছেন। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা ইন্দিরা গান্ধীকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারতে দেখেছি। সেখানে অধীর চৌধুরীও হেরেছেন। সেটা আমরা মেনেও নিয়েছি। জয়–পরাজয় রাজনীতির অঙ্গ। তৃণমূলের এটা নিয়ে এত মাথা খারাপ হল কেন বুঝতে পারছি না। অধীর বরাবরই মানুষের কথা বলেছেন। যখন সাংসদ ছিলেন তখনও তিনি মানুষের কথা বলেছেন, মানুষের কাজ করেছেন। এখনও মানুষের কথা বলছেন। এটাই তো রাজনীতির কাজ।’