রাজ্য সরকার এবার অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করল। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে চালু হবে স্মার্ট ক্লাস। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি পুরসভা এলাকায় প্রাথমিক স্কুলে স্মার্ট ক্লাস চালু হয়েছে। খোদ কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের উদ্যোগে চেতলা এলাকায় মেয়র’স স্কুলে স্মার্ট ক্লাস হয়েছে। তাছাড়া সরকারি স্কুলগুলির অনেকগুলিতেই চালু হয়েছে স্মার্ট ক্লাস। এবার সেটা একেবারে গ্রামবাংলার প্রান্তিক স্তরে নামিয়ে আনতে চাইছে রাজ্য সরকার। তাই এবার সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে স্মার্ট ক্লাস করতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে যে স্মার্ট ক্লাস হবে সেখানে কেমন ব্যবস্থা থাকবে সেটা অনেকে জানতে আগ্রহী। আর জানা গিয়েছে, এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির স্কুলে থাকবে টিভি, ডিসপ্লে বোর্ড, খেলার সামগ্রী–সহ নানা আয়োজন। খুদে পড়ুয়াদের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। মিড–ডে মিল তো পাচ্ছেই। তার সঙ্গে আধুনিক শিক্ষার ছোঁয়া পেলে স্কুলছুট কমবে। তার সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে উচ্চ–প্রাথমিক শিক্ষায় যেতে আগ্রহ বাড়বে। এমনকী সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার পর্যন্ত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর এই বিদ্যুৎ বিল মেটাবে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: চুরি হয়েছিল পিতলের গণেশ মূর্তি, একমাস সময়ের মধ্যে মন্দিরে ফিরিয়ে আনল মাল থানার পুলিশ
খুদে পড়ুয়াদের আগ্রহ বাড়াতে এখানে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান দেখাতে টিভি রাখা হবে। এই ব্যবস্থার পাশাপাশি আধুনিক ডিসপ্লে বোর্ড থাকছে। তার সঙ্গে খুদে পড়ুয়াদের নানা খেলার সামগ্রী থাকছে। আর খাবারের তালিকা দিন অনুযায়ী লেখা থাকবে দেওয়ালে। যা শিশু পড়ুয়াদের মনে আনন্দ নিয়ে আসবে। প্রত্যেক জেলাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হতে চলেছে। এই বিষয়ে কোচবিহারের জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা বলেন, ‘শিক্ষার ভিত সুদৃঢ় করতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মার্চ মাসেই প্রথম ধাপের কিছু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। তারপরে ধাপে ধাপে বাকি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিরও পরিকাঠামো উন্নয়নেও কাজ শুরু হবে।’
প্রত্যেক জেলায় এই কাজ হলে শিশু পড়ুয়াদের মধ্যে পড়ার আগ্রহ বাড়বে। অভিভাবক যাঁরা তাঁরা এসেও এমন সুন্দর পরিবেশ দেখলে পড়ুয়াদের আরও বেশি করে স্কুলমুখী করবে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির আর্থিক খরচ করা হবে। প্রত্যেকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ৩০ হাজার টাকা করে ব্যয় করা হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। প্রত্যেকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কোনদিন কী খাবার বরাদ্দ করা হবে সেটাও লেখা থাকবে দেওয়ালে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে টিভি থেকে খেলার সামগ্রী থাকলে শিশুরা বেশি উৎসাহিত হবে। এবারে স্মার্ট ক্লাস চালুর ভাবনাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন শিক্ষাবিদরা।