দলের শৃঙ্খলা ভেঙে নিজস্ব উদ্যোগে বিজয়া সম্মিলনী আয়োজন করায় রামনগর বিধানসভার তিন প্রভাবশালী তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকে শোকজ করেছে রাজ্য নেতৃত্ব। শুক্রবার এই নির্দেশ পাঠিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি এবং জেলা সভাপতি পীযূষকান্তি পণ্ডা। ওই তিন নেতার হাতে শোকজপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: লোকসভা ভোটের আগে বাড়ি, আর বিধানসভা নির্বাচনের আগে অফিসে ইডি, কী বললেন সুজিত?
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিনজন নেতার বিরুদ্ধে সরাসরি শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁদের আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। শোকজ হওয়া তিন নেতা হলেন জেলা পরিষদের খাদ্য ও সরবরাহ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তমালতরু দাসমহাপাত্র, রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ কৌশিক বারিক এবং পদিমা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুশান্ত পাত্র।তিনজনই রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরির বিরোধী শিবিরের সদস্য এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
রামনগর বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নতুন নয়। কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে সেই বিভাজন আরও স্পষ্ট হয়েছে। সম্প্রতি ব্লক সভাপতির পদে রদবদল করে অখিল গিরি ঘনিষ্ঠদের দায়িত্ব দেওয়া হয়, যা নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধে অপর গোষ্ঠীতে। এই প্রেক্ষাপটেই ৭ অক্টোবর দীঘা বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় রামনগর-১ ও ২ ব্লকের উদ্যোগে বিজয়া সম্মিলনির আয়োজন করা হয়। সেখানে নেতৃত্বে ছিলেন অখিল গিরি বিরোধী দল। রামনগর-১ ব্লকে অনুষ্ঠানের কনভেনর হন সুশান্ত পাত্র, আর রামনগর-২ ব্লকের কনভেনর ছিলেন তমালতরু দাসমহাপাত্র।
প্রচারে বলা হয়েছিল এটি তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনী। যদিও রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে তখনও কোনও অনুমোদন বা নির্দেশ জারি হয়নি। বিধায়ক অখিল গিরির শিবির বিষয়টি নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে আপত্তি জানায়। দলের পক্ষ থেকে পরে জানানো হয়, রামনগর-২ ব্লকে ১৫ অক্টোবর এবং রামনগর-১ ব্লকে ১৬ অক্টোবর বিজয়া সম্মিলনির দিন নির্ধারিত হয়েছে। কিন্তু তার আগেই ৮ অক্টোবর ওই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ায় বিতর্ক দানা বাঁধে। বিজয়া সম্মিলনীটি অনুষ্ঠিত হয় দীঘা বাইপাস সংলগ্ন সুশান্ত পাত্রের পানীয় জল ফ্যাক্টরির হলে। সেখানে বক্তব্য রাখেন কৌশিক বারিকসহ অন্যান্য নেতারা। সেই ভিডিয়ো রাজ্য নেতৃত্বের হাতে পৌঁছাতেই শোকজের নির্দেশ আসে। সুশান্ত পাত্র অবশ্য দাবি করেছেন, এটি কোনও দলীয় অনুষ্ঠান ছিল না। তিনি নিজের জায়গায় ঘরোয়াভাবে আয়োজন করেছেন। সেখানে পার্টির ব্যানার ছিল না। অন্যদিকে কৌশিক বারিক বলেন, পার্টির ব্যানার ছাড়াই অনুষ্ঠান করা হয়েছে। তবুও কেন শোকজ করা হল, বুঝতে পারছেন না। শনিবার জবাব দেবেন। এদিকে, তমালতরু দাসমহাপাত্র শুক্রবারই জবাব পাঠিয়ে দিয়েছেন।