লোকসভা নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। আর বাংলায় ফলাফল দাঁড়িয়েছে—তৃণমূল কংগ্রেস ২৯টি আসন, বিজেপি ১২টি আসন এবং কংগ্রেস ১টি আসন। এই ফলাফলের পরই ভোটে কারচুপি করে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস বলে অভিযোগ করছেন বিজেপি নেতারা এবং পরাজিত প্রার্থীরা। অথচ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন ছিল নির্বাচন কমিশন, কেন্দ্রীয় বাহিনী, অত্যাধুনিক ব্যবস্থা, ভিভিপ্যাট–সহ অনেক কিছু। নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ করা পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে নানা পদে অফিসার বদলে দিয়ে নির্বাচন করা হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল বেরিয়ে যাওয়ার এতদিন পর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন, আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে কারচুপি করে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আজ, সোমবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শুভেন্দু অধিকারী একটি ট্যাবুলেশন সিট তুলে ধরে এমনই দাবি করেছেন। অথচ এখান থেকে জিতে মিতালি বাগ সংসদে গিয়েছেন। এখানে হেরেছেন বিজেপি প্রার্থী। তবে এখন শুভেন্দু অধিকারী দাবি করছেন, ভোট চুরি করা হয়েছে। কদিন আগেই এমন আরও কয়েকটি দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন শুভেন্দু অধিকারী। ঘাটাল থেকে শুরু করে বসিরহাট একাধিক লোকসভা কেন্দ্রে পুনর্গণনার দাবি তুলে মামলা করা হয়েছে। যদিও তা নিয়ে এখনও তেমন কোনও বড় খবর প্রকাশ্যে আসেনি।
এই আবহে এবার আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে ভোট চুরির অভিযোগ তুললেন শুভেন্দু অধিকারী। এক্স হ্যান্ডেলে শুভেন্দু লেখেন, ‘আরামবাগে জয়ের ব্যবধান মাত্র ৬৩৯৯। এখানে ভোট চুরি করা হয়েছে। এখানে অ্যাসিসটেন্ট রিটার্নিং অফিসারের টেবিলে যে ট্যাবুলেশন সিট থাকে যেখানে প্রাথমিক গণনা লিখে রাখেন কাউন্টিং এজেন্টরা সেখানে গড়মিল দেখা গিয়েছে। হরিপালের ২৩৬ নম্বর বুথে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ২৫২ ভোট। আর বিজেপি পেয়েছিল ২৫৪ ভোট। কিন্তু অদ্ভূতভাবে যখন এই তথ্য কম্পিউটার রুম থেকে নির্বাচন কমিশনের সাইটে তোলা হল তখন দেখা যাচ্ছে ২৩৬ নম্বর বুথে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ৫৫২ ভোট এবং বিজেপি ভোট পেয়েছে ২৫৪ ভোট।’
আরও পড়ুন: ‘রাজ্যে শাসন বলে কিছু আছে?’ নয়াদিল্লি থেকে ফিরে চোপড়া পরিদর্শনে যাবেন রাজ্যপাল
এই তথ্য যদি সত্যি হতো তাহলে তা নির্বাচন কমিশনের চোখে পড়ত। এখন এমন তথ্য তুলে পিঠ বাঁচানোর কৌশল করছে বিজেপি বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। তবে শুভেন্দু অধিকারী আরও লেখেন, ‘এমন অনেক উদাহরণ আছে। বিজেপি প্রার্থী স্বচ্ছ ভাবে নির্বাচন জিতেছিলেন। একটি রাজনৈতিক দল অ্যাসিসটেন্ট রিটার্নিং অফিসারের টেবিল কন্ট্রোল করছিল। যদি এমন কারচুপি করা হয় তাহলে একজন প্রার্থীর কী করার থাকতে পারে! গণনার পর এখানে কারচুপি করা হয়।’ যদিও এমন অভিযোগ করার অর্থ নির্বাচন কমিশনকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া। আর এমন তথ্য প্রমাণ যদি থাকে বিরোধী দলনেতার কাছে তাহলে তিনি আদলতে যাচ্ছেন না কেন? উঠছে প্রশ্ন।