যাত্রী পরিষেবা চালুর পরই পরপর দু'দিনে দু'বার পাথ ছোড়ার ঘটনা ঘটেছিল বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এরই মধ্যে এবার বন্দে ভারতে এক্সপ্রেসে পাথর ছোড়ার ঘটনার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এল। নিরাপত্তার কারণে বন্দে ভারতের কামরার বাইরে যে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে, তাতেই ধরা পড়েছে দুষ্কৃতীদের চেহারা। সেই ভিডিয়ো দেখেই এবার দোষীদের খোঁজে তল্লাশি চালাতে শুরু করল পুলিশ। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে পাথর ছোড়া হয়নি। পাথর ছোড়া হয় বিহার থেকে। পাথর ছোড়ার ঘটনায় রাজ্য জিআরপি এবং রাজ্য পুলিশের সঙ্গে তদন্ত শুরু করেছে রেল সুরক্ষা বাহিনী। অভিযুক্তদের খুঁজে বার করে গ্রেফতার করতে ইতিমধ্যেই তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১টা ২০ নাগাদ নিউ জলপাইগুড়িগামী ট্রেনকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। পাথরের আঘাতে ট্রেনের জানলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সি-৩ এবং সি-৬ কামরার জানলা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই হামলায়। রেল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হাওড়াগামী ট্রেনটি মালদা টাউন স্টেশনে ঢুকলে ইন্সপেকশনের সময় কাচের চিড় নজরে আসে। আরপিএফের সামসি পোস্টে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় হাওড়াগামী বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। মালদার কুমারগঞ্জ এলাকায় এই হামলা হয় বলে জানায় রেল পুলিশ। পাথরের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সি-১৩ কারমার একটি দরজা।
বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে পাথর ছোড়ার ঘটনার তদন্তভার এনআইএ-কে দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিকে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার দাবি জানান সিআইডি তদন্তের। যা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে বিজেপির অন্দরে। এদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই প্রসঙ্গে বলেছেন, 'রাজ্যে আরও দুটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস আসার কথা রয়েছে। কিন্তু এত সুন্দর একটি ট্রেনে যাত্রা শুরু করার প্রথমে এইভাবে হামলার ফলে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে আগামিদিনে রাজ্যে আরও বন্দে ভারত এক্সপ্রেস দেওয়া নিয়ে রেল মন্ত্রককে ভাবনাচিন্তা করতে হবে।' সুকান্তর অভিযোগ, শাসকদল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ধরনের কাজ করেছে।
হামলা নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষও আঙুল তুলেছেন তৃণমূলের দিকেই। এই বিষয়ে তিনি বলেছেন, 'এই দ্রুতগতির ট্রেন আমাদের দেশের গর্ব। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয়, এখানে সেই ট্রেনের পরিষেবা বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। এতে মানুষ বঞ্চিত হবে। দেশের সম্মানেও আঘাত লাগবে। যদিও এখানকার সরকারের এ বিষয়ে কোনও হেলদোল নেই। কোনও প্রতিক্রিয়াও দিচ্ছে না। এ ঘটনা আটকানোর কোনও চেষ্টাও নেই। পরপর দুবার এই একই ধরনের ঘটনা ঘটল। তদন্ত করা উচিত। কিন্তু, সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের হাতে। জানি না ওদের এতে প্রচ্ছন্ন সমর্থন আছে কি না। উদ্বোধনের সময় যে ধরনের বিতর্ক হয়েছিল তাতে সবার মনে এই প্রশ্ন উঠছে।'